সিলেটে দায়মুক্তির আশায় লুটের পাথর জমা দিচ্ছেন অনেকে
![]() |
ভোলাগঞ্জ থেকে লুট হওয়া পাথর উদ্ধারের পর ট্রাকে তোলা হচ্ছে। এ সব পাথর ফিরিয়ে নেওয়া হবে সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে। আজ রোববার সিলেট সদরের ধোপাগুল এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ থেকে লুট হওয়া সাদাপাথর নিজ খরচে বহন করে প্রশাসনের কাছে তুলে দিচ্ছেন মানুষজন। তবে আজ রোববার সন্ধ্যা পৌনে সাতটা পর্যন্ত শতাধিক ব্যক্তি প্রায় দুই লাখ ঘনফুট পাথর প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছেন।
গতকাল শনিবার জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, আগামী মঙ্গলবার বেলা পাঁচটার মধ্যে মজুত রাখা সাদাপাথর নিজ খরচে কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জে প্রশাসনের কাছে জমা দিলেই বিনা শর্তে দায়মুক্তি পাওয়া যাবে। এ সময়সীমার পর যাঁদের কাছে পাথর পাওয়া যাবে, আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, শনিবার বিকেল থেকে বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে প্রশাসন পাথর ফিরিয়ে দিয়ে দায়মুক্ত হওয়ার আহ্বান জানায়। এমন ঘোষণার পর রোববার প্রথম দিন কোম্পানীগঞ্জসহ আশপাশের এলাকা থেকে অনেক মানুষ নিজ খরচে সাদাপাথর ভোলাগঞ্জে এনে জমা দিয়েছেন। ট্রাক, নৌকাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে মজুতকারীরা এসব পাথর এনে জমা দিচ্ছেন।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম জানান, শনিবার বিকেল থেকে রোববার রাত আটটা পর্যন্ত অন্তত শতাধিক মানুষ প্রায় ২ লাখ ঘনফুট সাদাপাথর স্বেচ্ছায় নিজ খরচে পরিবহন করে প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছেন।
সিলেট সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোশনূর রুবাইয়াৎ বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময়ের প্রথম দিন সদর উপজেলার দুজন ব্যক্তি আটটি ট্রাকে করে তাঁদের কাছে মজুত থাকা ৮০০ ঘনঘুট পাথর নিজ খরচে ভোলাগঞ্জে পাঠিয়েছেন। এর আগে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ধোপাগুল এলাকা থেকে উদ্ধার করা প্রায় ৫০ হাজার ঘনফুট সাদাপাথর অন্তত এক শ ট্রাকে করে ভোলাগঞ্জে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া আজ সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত উপজেলাটিতে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে প্রায় ৬০ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করেছে।
এদিকে জৈন্তাপুর উপজেলা থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার ঘনফুট পাথর আজ গোয়াইনঘাট উপজেলায় পাঠানো হয়েছে বলে গোয়াইনঘাটের ইউএনও রতন কুমার অধিকারী জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এসব পাথর দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাফলং জিরো পয়েন্টে প্রতিস্থাপন করা হবে।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, সাদাপাথর কেউ কেউ লুট করে নিয়েছেন। কেউবা ব্যবসার জন্য এসব লুটের পাথর কিনে মজুত রেখেছেন। তবে স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে যে বা যাঁরাই সাদাপাথর নিজ খরচে পর্যটনকেন্দ্রসংলগ্ন ভোলাগঞ্জে দিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের নাম তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে। সরাসরি লুটের সঙ্গে জড়িত না থাকলে এসব ব্যক্তিরা দায়মুক্তি পাবেন।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ইউএনও মো. রবিন মিয়া বলেন, চারপাশ থেকে মানুষ এসে সাদাপাথর ফিরিয়ে দিচ্ছেন। তবে কী পরিমাণ পাথর জমা হয়েছে, সেটা এখনো পরিমাপ করা হয়নি। এখন স্থানীয় প্রশাসন এসব পাথর গ্রহণ করছে। এসব পাথর প্রতিস্থাপন করে সাদাপাথরের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে প্রশাসন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন