নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা

‘গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪: জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

সংস্কার নিয়ে শুধু বিএনপিকে দোষারোপ করে কথা বলা জাতীয় ঐক্যের জন্য সহায়ক হবে না বলে সতর্ক করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘একটি কৌশলী প্রচারণা চালানো হচ্ছে, বলা হচ্ছে, বিএনপি সংস্কার মানছে না। অথচ বাস্তবে আমরা বহু আগেই সংস্কারের দিকনির্দেশনা দিয়েছি এবং ঐকমত্যের ভিত্তিতে কাজ করার পক্ষেই আমরা কথা বলছি।’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে শহীদ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ‘গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪: জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এ অনুষ্ঠান হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ছিলেন প্রধান অতিথি। অনুষ্ঠানে তাঁর ভিডিও বক্তব্য প্রচার করা হয়।

সংস্কার নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের কথা বলেছি, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্যের কথা বলেছি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও অর্থনৈতিক সংস্কারের কথা বলেছি। তাই শুধু বিএনপিকে দোষারোপ করলে তা ঐক্যের সহায়ক হবে না।’ তিনি বলেন, বিএনপি বরাবরই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় বিশ্বাস করে এবং সে অনুযায়ী সংস্কারের প্রস্তাব দিয়ে আসছে। ২০১৬ সালে খালেদা জিয়া ‘ভিশন ২০৩০’ প্রকাশ করেছিলেন, পরে ২০২২ সালে দলীয়ভাবে ২৭ দফা রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখা দেওয়া হয়, যা পরবর্তী সময়ে ৩১ দফায় রূপান্তরিত হয়।

তরুণেরাই দেশের রাজনীতিতে পরিবর্তন এনেছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তাদের ত্যাগ ও সংগ্রামে আমরা আজকের জায়গায় এসেছি। আমরা চাই, একটি সত্যিকার গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, যেখানে থাকবে কর্মসংস্থান, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন ও ধর্মীয় স্বাধীনতা।’

সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জুলাই সনদের বিষয়ে আমরা অনেক আগেই প্রস্তাব দিয়েছি। এখন সরকারের দায়িত্ব এটিকে চূড়ান্ত করা এবং জাতিকে জানানো—কোন কোন বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, আর কোন বিষয়ে হয়নি।’ তিনি বলেন, একটি লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (উদার গণতান্ত্রিক দল) হিসেবে বিশ্বাস করি নির্বাচন ও পার্লামেন্টের মাধ্যমেই পরিবর্তন সম্ভব। সেই বিশ্বাস থেকেই আমরা এগিয়ে চলছি। এবং জনগণের সঙ্গে থেকেই আমরা সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করব।’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শহীদ আবু সাঈদ, শহীদ মীর মুগ্ধ, শহীদ ওয়াসিমসহ জুলাই শহীদদের অনেকের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গুম ও খুনের শিকার অনেকের স্বজনেরা। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা ছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।