নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
![]() |
গ্যাস-বিদ্যুত | প্রতীকী ছবি |
চলমান গ্যাস ও বিদ্যুৎ-সংকটে বিপর্যস্ত শিল্প খাতের জন্য জরুরি সমাধান চেয়ে সম্প্রতি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে যৌথভাবে চিঠি দিয়েছে ছয়টি ব্যবসায়ী সংগঠন। চিঠিতে বিদ্যমান সংযোগ নীতিতে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার, নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ, সংযোগপ্রক্রিয়ার সহজীকরণ, পূর্বানুমোদনের বাধ্যবাধকতা বাতিলসহ ১০ দফা দাবি জানিয়েছে সংগঠনগুলো।
চিঠি দিয়েছে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের তিন সংগঠন বিজিএমইএ, বিটিএমএ, বিকেএমইএ। এ ছাড়া বিসিআই, বিটিটিএমইএ এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। তারা বলছে, গ্যাস সরবরাহ হ্রাস পাওয়ায় শিল্পকারখানাগুলোর উৎপাদন কার্যত থমকে গেছে। অনেক প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন অর্ধেকে নেমেছে, ফলে রপ্তানি আয়, কর্মসংস্থান ও অভ্যন্তরীণ বাজারেও ধস নেমেছে।
ব্যবসায়ী নেতারা অভিযোগ করেছেন, ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্ট ও সাধারণ শিল্পে গ্যাসচালিত উৎপাদনের জন্য যে গ্যাস সরবরাহ প্রয়োজন, তা মিলছে না। অথচ পূর্বানুমোদিত লোড বা চাপ অপরিবর্তিত রেখে একই মালিকানাধীন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নতুন স্থাপনাগুলোতেও তিতাস কর্তৃক নতুন অনুমোদনের শর্ত চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা অনাবশ্যক ও উৎপাদনের গতিরোধক।
চিঠিতে ব্যবসায়ী নেতারা স্পষ্ট করে বলেছেন, পূর্বানুমোদিত ঘণ্টাপ্রতি লোড, মাসিক লোড এবং বহির্গমন চাপ অপরিবর্তিত থাকলে একই মালিকানাধীন কারখানার অভ্যন্তরীণ কাঠামোতে—যেমন পাইপলাইন, রেগুলেটর, ব্র্যান্ড বা মিটার পরিবর্তন বা স্থানান্তরের জন্য তিতাসের অনুমতির প্রয়োজন নেই। এ ব্যাপারে তিতাস যেন আর হস্তক্ষেপ না করে।
বিশেষভাবে বিদ্যুৎ-সংযোগের অনুমতি সাপেক্ষে গ্যাস-সংযোগের শর্ত বাতিলের দাবি এসেছে। ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘বর্তমানে দেশের বিদ্যুৎ বিতরণব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে। বিতরণ কোম্পানিগুলো, বিশেষ করে পল্লী বিদ্যুৎ, শিল্পমানের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে ব্যর্থ। তাই ১০ মেগাওয়াট বা তার বেশি ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্টে গ্যাস ব্যবহারে নতুন সংযোগ দিতে বিদ্যুৎ কোম্পানির ছাড়পত্র নেওয়ার বিধান বাতিল করতে হবে।’
ব্যবসায়ীরা আরও বলেছেন, একই আঙিনায় অবস্থিত এবং একই মালিকানাধীন একাধিক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে গ্যাস লোড স্থানান্তর হলে সেটিকে নতুন সংযোগ হিসেবে গণ্য করা যাবে না। এই অনুমোদন যেন তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিজস্ব বিবেচনায় দ্রুত দিতে পারেন, এমন নীতিগত স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
চিঠিতে অনলাইন আবেদন চালু, স্থানীয় গ্যাস অফিস থেকে অনুমোদন, ইডিসি মিটার স্থাপনে নির্দিষ্ট ফর্ম ও ডকুমেন্ট চেকলিস্ট, ব্র্যান্ড তালিকা প্রকাশ, নির্ধারিত সময়সীমা ও লো-প্রেশার রেগুলেটর অনুমোদনের প্রক্রিয়া সহজ করার দাবি জানানো হয়েছে। প্রয়োজনে ইঞ্জিনিয়ারিং নির্দেশিকাও হালনাগাদ করার আহ্বান জানায় সংগঠনগুলো।