প্রতিনিধি খুলনা

পুলিশ পরিচয়ে খুলনায় একজন খাদ্য পরিদর্শককে জোর করে ট্রলারে তুলে নেওয়া হয়েছে | ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

খুলনায় অপহরণের সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে খাদ্য পরিদর্শক সুশান্ত কুমার মজুমদারকে। গতকাল রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তেরখাদা উপজেলার আজগড়া বিআরবি উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠ থেকে তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় তাঁর হাত, পা ও চোখ বাঁধা ছিল।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (সিটিএসবি) আবুল বাশার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে অপহৃত খাদ্য পরিদর্শক সুশান্ত কুমার মজুমদারকে উদ্ধার করেছে খুলনা থানার পুলিশ।

সুশান্ত কুমার মজুমদার খুলনা নগরের ৪ নম্বর ঘাটের খাদ্য পরিদর্শক ও ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত। তাঁর বাড়ি বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায়।

খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার সানওয়ার হোসাইন মাসুম জানান, অপহরণের খবর পাওয়ার পর থেকে পুলিশের একাধিক ইউনিট অভিযান শুরু করে। পুলিশের তৎপরতায় আতঙ্কিত হয়ে অপহরণকারীরা সুশান্ত কুমারকে ওই বিদ্যালয়ের মাঠে ফেলে রেখে যায়। পরে তেরখাদা থানার পুলিশের সহায়তায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়। তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ জানায়, অপহরণের পর ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে চক্রটি। পরিবার থেকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের (মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস–এমএফএস) মাধ্যমে কিছু অর্থ দেওয়া হয়। পুলিশ রূপসা উপজেলার সেনের বাজার এলাকার ওই মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
এর আগে গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে খুলনা নগরের ৪ নম্বর ঘাট এলাকা থেকে সুশান্ত কুমার মজুমদারকে ‘পুলিশ’ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কয়েকজন ব্যক্তি তাঁকে জোর করে একটি ট্রলারে তুলে নেন। এ সময় এক পথচারী ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি ট্রলারে একজনকে জোর করে তুলছেন। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে এক ব্যক্তির গোঙানির শব্দ ও চিৎকার শোনা যাচ্ছে। এরপর দ্রুতগতিতে ট্রলারটি সরে পড়ে।

ঘটনার পরপরই ভুক্তভোগীর স্ত্রী মাধবী রানী মজুমদার খুলনা সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন, পুলিশের লোক পরিচয় দিয়ে মো. রেজা ও বাবু মণ্ডল নামের দুই ব্যক্তি এবং আরও তিনজন মিলে তাঁর স্বামীকে হাতকড়া পরিয়ে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যান। ট্রলারে ওঠানোর পর মারতে মারতে তাঁরা ট্রলার জেলখানা ঘাটের দিকে নিয়ে যান। অপহরণের পর তাঁর ব্যবহৃত দুটি মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। বাবু মণ্ডল এর আগে তাঁর স্বামীর কাছে একাধিকবার টাকা দাবি করেছিলেন। তবে সুশান্ত কুমার তাতে রাজি হননি।