প্রতিনিধি নওগাঁ

মৃত্যুদণ্ড | প্রতীকী ছবি

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় স্কুলছাত্রকে অপহরণ ও হত্যার মামলায় দুজনকে মৃত্যুদণ্ড ও দুজনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল–২–এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি রেজাউল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন বদলগাছী উপজেলার খাদাইল গ্রামের মিশু মণ্ডল (২৫) ও পিংকি আক্তার (৩৪)। ১০ বছর কারাদণ্ড পাওয়া দুই আসামি হলেন পূর্ব খাদাইল গ্রামের হুজাইফা ও সাজু আহম্মেদ। ঘটনার সময় তাঁদের বয়স ছিল ১৪ বছর। বর্তমানে তাঁরা ১৮ বছরের বেশি বয়সী। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডিত চারজনই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁদের নওগাঁ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, নিহত স্কুলছাত্র নাজমুল হোসেনের বয়স ছিল ১৪ বছর। আসামি পিংকি ছদ্মনামে নাজমুলের সঙ্গে মুঠোফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ২০২০ সালের ৬ নভেম্বর বিকেলে ফোনে ডেকে নাজমুলকে জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার কেসের মোড়ে নিয়ে যান। সেখানে পৌঁছালে মিশু, পিংকি, হুজাইফা ও সাজু মিলে নাজমুলকে একটি বাড়িতে আটকে রাখেন। পরদিন মুঠোফোনে নাজমুলের বাবার কাছে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। টাকা না পেয়ে তাঁরা নাজমুলকে হত্যা করেন। নাজমুলের মরদেহ গোপন করতে মিশু প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে আক্কেলপুর রেলগেটের উত্তর পাশে একটি ডোবার মধ্যে ফেলে দেন। ঘটনার চার দিন পর সেখান থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নাজমুলের বাবা আল আমিন হোসেন ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর বদলগাছী থানায় এ ঘটনায় মামলা করেন। মামলায় মিশু মণ্ডল, তাঁর বাবা আজমল মণ্ডল, একই গ্রামের রিনা পারভীন ও সোহাগ হোসেনের নাম উল্লেখ করে আরও ছয় থেকে সাতজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে মিশু, পিংকি, হুজাইফা ও সাজুকে অভিযুক্ত করে ২০২১ সালের ৮ জুন আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। চার আসামিই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলায় ২০ সাক্ষী সাক্ষ্য দেন। অভিযুক্ত দুই কিশোরের বয়স বর্তমানে ১৮ বছরের বেশি হওয়ায় তাঁদেরও নওগাঁ জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।