নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে গোলচত্বরে সকাল ১০টা থেকে জমায়েত হন শত শত শিক্ষার্থী | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দুজন উপদেষ্টা কলেজ পরিদর্শনে আসেন। সেখান থেকে বের হয়ে আসার সময় শিক্ষার্থীরা তাঁদের ঘিরে ধরেন। শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করতে থাকেন।

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার পরে কলেজের  ৫ নম্বর ভবনের নিচতলায় কনফারেন্স কক্ষে যান। তাঁদের সঙ্গে কলেজের শিক্ষকেরাও ছিলেন। সেখানে পাঁচ থেকে সাতজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধির সঙ্গে তাঁদের আলোচনা চলছে। এ সময় বাইরে শত শত শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।

নিহতদের সঠিক নাম ও পরিচয় প্রকাশ, আহতদের সম্পূর্ণ ও নির্ভুল তালিকা, শিক্ষার্থীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, বিমানবাহিনীর ব্যবহৃত ঝুঁকিপূর্ণ ও পুরোনো প্রশিক্ষণ বিমান বাতিল করে আধুনিক ও নিরাপদ বিমান চালুসহ বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছেন।  

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষার্থীদের অবস্থান ও বিক্ষোভ। আজ মঙ্গলবার সকালে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন    

মাইলস্টোন কলেজের শিক্ষার্থীরা সকাল ৯টায় ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচির পরিকল্পনা করেছিল। সকাল সোয়া ৯টার দিকে দিয়াবাড়ি আর্মি ক্যাম্পের পক্ষ থেকে মাইকিং করে সভা-সমাবেশ, দলবদ্ধ কর্মসূচি কিংবা অবস্থান নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ঘোষণা দিয়ে জানানো হয়, দিয়াবাড়ি গোলচত্বর ও আশপাশের এলাকায় কোনো ধরনের জমায়েত বা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা যাবে না।

এদিকে আজও কলেজ ও আশপাশের এলাকায় উৎসুক জনতার ভিড় দেখা গেছে। অনেকেই সেখানে আসছেন। কেউ কেউ খুঁজছেন সন্তান ও স্বজনকে।

মাইলস্টোন স্কুলের নিরাপত্তা প্রহরী আমির হোসেন জানান, সকালে আলো ফোটার পর থেকেই লোকজন আসতে শুরু করেছে।  সবাইকে শুধু অনুরোধ করছি—‘দেখে যেন চলে যান। ভিড় যেন না করেন।’

আজ সকালে স্কুলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের হোস্টেল ছাড়তে দেখা গেছে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা আসছিলেন এবং তাঁদের সন্তানদের নিয়ে যাচ্ছিলেন। বিমান যে ভবনে বিধ্বস্ত হয় সেটির পেছনে হায়দার আলী হোস্টেল থেকে শিক্ষার্থীদের চলে যেতে দেখা গেছে।

মাইলস্টোন কলেজে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার যান। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন    

সালাউদ্দিন আহমেদ নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘দুপুরে যখন খবরটা শুনতে পাই, ভয়ে আঁতকে উঠেছিলাম। পরে জানতে পারি ছেলে ভালো আছে।’

সকালে কথা হয় স্কুলের শিক্ষক আফরিনের সঙ্গে। তিনি জানান, দুর্ঘটনায় ভবনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যেটি মূলত প্রাথমিক শাখার জন্য ব্যবহৃত হতো। তিনি বলেন, ভবনের ওই অংশে কোন শ্রেণির কক্ষ ছিল, তাতে কতজন শিক্ষার্থী ছিল—এখনো নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।

মাইলস্টোন কলেজে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার  | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন     

গতকাল সোমবার দুপুরে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়। এতে আজ সকাল পর্যন্ত ২৭ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী চিকিৎসক মো. সায়েদুর রহমান। তিনি আরও জানান,  চারটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৭৮ জন।

বিভিন্ন দাবিতে কলেজে  বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন     

মাইলস্টোন কলেজের পরিচালক রাসেল তালুকদার জানান, এক নম্বর ভবনের নিচে হতাহতদের তথ্যের বিষয়ে  হেল্প ডেস্ক খোলা হয়েছে। শিক্ষকেরা সেখানে তথ্য হালনাগাদ করছেন। অভিভাবকেরা সেখানে তথ্য দিচ্ছেন এবং তথ্য নিচ্ছেন।