প্রতিনিধি জামালপুর

জামালপুর শহরের সাতটি পরিবারকে একঘরে করে রাখা হয়। রোববার সকালে শহরের দাপুনিয়া এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন   

তিন দিন ধরে জামালপুর শহরের দাপুনিয়া এলাকায় সাতটি পরিবারকে একঘরে করে রেখেছিল একটি মহল। এলাকার কোনো দোকানদার পণ্য বিক্রি করলে কিংবা কোনো প্রতিবেশী কথা বললে গুনতে হতো পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা। অবশেষে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আজ সোমবার সকাল থেকে পরিবারগুলো আবারও আগের মতো স্বাধীনভাবে চলাফেরা শুরু করেছে।

একঘরে করে রাখার খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর প্রশাসনের টনক নড়ে। গতকাল ও আজ সকাল পর্যন্ত এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে কয়েক দফায় আলোচনার পর ওই সাত পরিবারকে একঘরে রাখার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়। ফলে আজ সকাল থেকে পরিবারগুলো আবারও স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন শুরু করেছে। তবে অভিযুক্ত শামীম আহমেদ ও আমিনুল ইসলামসহ প্রভাবশালীরা গা ঢাকা দিয়েছেন।

সাত পরিবারের মধ্যে এক পরিবারের মো. ইসমাইল থানায় ওই লিখিত অভিযোগ দেন। তাঁর ছেলে মৌকিব হোসেন বলেন, ‘গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে পুলিশ প্রশাসন আলোচনায় বসে এবং আজ সকালে মানবাধিকারকর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম আবারও আলোচনা মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান করেন। এর পর থেকে আমরা আবারও স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছি। তবে যাঁরা আমাদের সমাজের মধ্যে হেয়প্রতিপন্ন করলেন এবং গত তিন দিন আমাদের অবরুদ্ধ করে রেখেছিল তাঁদের বিরুদ্ধে প্রশাসন এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। শুনেছি, তাঁরা নাকি এলাকা থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন। তবে তাঁদের বিরুদ্ধে এমন শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া করা হোক, যাতে এই ধরনের কাজ আর কখনোই কোনো পরিবারের সঙ্গে না করতে পারেন।’

জামালপুরের মানবাধিকারকর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, ‘এটা মানবতাবিরোধী কাজ হয়েছিল। বর্তমান সময়ে এ ধরনের কাজ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ওই গোষ্ঠীর তিনজন মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন। তার মানে এই পরিবারগুলো শহীদ পরিবার। আর তাঁদের সঙ্গে চরম অন্যায় করেছে প্রভাবশালী একটি দুর্বৃত্ত মহল। ঘটনার পরই পরিবারগুলো আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। পরে বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর প্রশাসনের টনক নড়ে। অবশেষে সবকিছুর অবসান হয়েছে।’

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আনিসুর আশেকীন  বলেন, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে যাঁরা জড়িত ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।