প্রতিনিধি রাজশাহী
![]() |
রাজশাহীতে অব্যাহতি প্রাপ্ত এনসিপি নেতা নাহিদুল ইসলাম | ছবি: সংগৃহীত |
রাজশাহীতে জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) এক নেতাকে ‘গুরুতর’ দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে দল থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে কেন তাঁকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, এ বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
ওই নেতার নাম নাহিদুল ইসলাম ওরফে সাজু। তিনি এনসিপির রাজশাহী জেলা সমন্বয় কমিটির ১ নম্বর যুগ্ম সমন্বয়কারী।
এ বিষয়ে আজ শুক্রবার দলের যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন (সিফাত) স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়েছে, নাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে গুরুতর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। এ অবস্থায় শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাঁকে দলের প্রাথমিক পদসহ সব দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, এর যথাযথ ব্যাখ্যা আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে শৃঙ্খলা কমিটির প্রধান আবদুল্লাহ আল-আমিনের কাছে দাখিল করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এনসিপির স্থানীয় নেতাদের বরাতে জানা যায়, গত বুধবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে নগরের রানীবাজার এলাকার একটি রেস্তোরাঁয় দলটির এক নেতা আরেক নেতাকে মারধর করেন। রেস্তোরাঁটির মালিক এনসিপির রাজশাহী জেলা সমন্বয়ক কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী রাশেদুল ইসলাম। মারধরে আহত নেতার নাম ফিরোজ আলম। তিনি জেলা সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী। তাঁর বাড়ি রাজশাহীর খড়খড়ি এলাকার। কমিটির আরেক যুগ্ম সমন্বয়কারী নাহিদুল ইসলাম ফিরোজ আলমকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নাহিদুলের বাড়ি রাজশাহীর কাটাখালী এলাকায়।
আহত ফিরোজ আলম বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। ওয়ার্ডের রেজিস্ট্রার খাতায় দেখা যায়, বুধবার দিবাগত রাত ১২টায় তাঁকে ওই ওয়ার্ডে আনা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় ওয়ার্ডে তাঁকে চিকিৎসাধীন দেখা যায়। এ সময় কথা বলতে চাইলে অনুমতি দেননি ফিরোজ আলমের স্ত্রী সাথী খাতুন। তিনি জানান, চিকিৎসক ফিরোজ আলমকে কথা বলতে বারণ করেছেন। আজ বিকেলে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সাথী খাতুন জানান, তাঁর স্বামী ঘুমাচ্ছেন। ঘটনার বিষয়ে কিছুই তাঁর জানা নেই।
রাজশাহী জেলা এনসিপির একজন যুগ্ম সমন্বয়কারী জানিয়েছেন, বুধবার রাতে জেলা সমন্বয় কমিটির নেতারা প্রধান সমন্বয়কারী রাশেদুল ইসলামের রেস্তোরাঁয় বসেছিলেন। এ সময় নাহিদুল ইসলাম ও ফিরোজ আলমের কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে নাহিদুল ইসলাম উঠে গিয়ে ফিরোজ আলমের বুকে লাথি মারেন। এরপর জেলার প্রধান সমন্বয়কারী রাশেদুল ইসলামসহ অন্য নেতারা নাহিদুলকে থামান। পরে নাহিদুল সেখান থেকে চলে যান। এরপর ফিরোজ আলম অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
১৮ জুন রাতে এনসিপির রাজশাহী জেলা ও মহানগর সমন্বয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। ২৫ সদস্যের জেলা কমিটিতে পাঁচজন যুগ্ম সমন্বয়কারী। দল থেকে অব্যাহতির চিঠি পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে আজ বিকেলে নাহিদুল ইসলাম বলেন, চিঠি তিনি দেখেছেন। দলের নেতাকে মারধর করার বিষয়ে জানতে চাইলে নাহিদুল বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে একটি চক্রান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি পরে কথা বলবেন।