প্রতিনিধি চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল  | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

বিদেশিদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার আগে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সহায়তায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর পরিচালনার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের উপস্থিতিতে আজ শনিবার চট্টগ্রাম বন্দরে এক সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।

সরকারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, বন্দরের সহায়তায় নৌবাহিনীর এনসিটি পরিচালনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, এ ব্যাপারে দুই–তিন দিনের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, এনসিটি পরিচালনায় চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে বন্দর থেকে জানানো হবে।

টার্মিনালটি ১৭ বছর ধরে দেশীয় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছে। বর্তমানে এনসিটি পরিচালনাকারী সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেডের চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ৬ জুলাই। এরপর বন্দরের ব্যবস্থাপনায় টার্মিনালটি পরিচালনার জন্য সরকারের কাছে অনুমোদন চেয়েছিল বন্দর কর্তৃপক্ষ।

নৌপরিবহন উপদেষ্টা আজ সকালে বন্দর পরিদর্শন করেন। এ সময় পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদও ছিলেন। এরপর বন্দর ভবনে কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভায় অংশ নেন। সেখানে নিউমুরিং টার্মিনাল নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী।

এমন সময়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো, যখন দেশের বামপন্থী দল ও সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে গঠিত ‘সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণ’ নামের একটি প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে রোডমার্চ কর্মসূচি চলছে। দুই দিনের এই কর্মসূচি অনুযায়ী, রোডমার্চটি এখন বন্দরের ৪ নম্বর ফটকের সামনে কাস্টমস মোড়ে পৌঁছানোর পর সেখানে সমাবেশ হচ্ছে। কর্মসূচির চার দাবির একটি হলো নিউমুরিং টার্মিনালসহ চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনা বিদেশিদের হাতে না দেওয়া।

এই টার্মিনালে পাঁচটি জেটি রয়েছে। এই পাঁচ জেটিতে চারটি সমুদ্রগ্রামী জাহাজ এবং একটি অভ্যন্তরীণ নৌপথে চলাচলকারী জাহাজ ভিড়তে পারে। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় টার্মিনাল। জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানো-নামানো, স্থানান্তরসহ নানা কাজ হয় টার্মিনালটিতে।

আওয়ামী লীগ আমলে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বা এনসিটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ডের হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এই প্রক্রিয়া এগিয়ে এনেছে। আগামী নভেম্বরে চুক্তি হওয়ার আশা রয়েছে। বিশ্বব্যাংকের সহযোগী ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) এই টার্মিনালে ট্রানজেকশন অ্যাডভাইজার বা বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে। অর্থ্যাৎ, চুক্তির আগপর্যন্ত নৌবাহিনী পরিচালনা করবে টার্মিনালটি।