নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
![]() |
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল | ছবি: সংগৃহীত |
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেতৃত্ব দেওয়া সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর মগবাজার এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন ডিএমপির জনসংযোগ শাখার উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
এর আগে, রোববার সন্ধ্যায় বিএনপির করা মামলায় গ্রেপ্তার হন সাবেক সিইসি কে এম নূরুল হুদা। মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে গ্রেপ্তার হলেন আরেক সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল।
বিএনপি করা মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ‘জনগণের ভোট ছাড়াই’ দশম (২০১৪), একাদশ (২০১৮) ও দ্বাদশ (২০২৪) সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করা হয়েছে। এই তিন নির্বাচনেই দায়িত্ব পালনকারী নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ১৯ জনকে আসামি করা হয়।
মামলাটি করা হয়েছে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায়।
সাবেক সিইসি নূরুল হুদাকে গ্রেপ্তারের সময় ‘জনতা’ পরিচয়ে কিছু ব্যক্তি উত্তরার বাসা থেকে তাঁকে অপদস্থ ও মারধর করে বলে অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা হয়। পরদিন আদালতে হাজির করার পর পুলিশ তাঁকে চার দিনের রিমান্ডে নেয়।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি। বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দল সেই নির্বাচন বর্জন করে। নির্বাচনে অংশগ্রহণমূলক চিত্র দেখাতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কিছু আসন ছেড়ে দেয় শরিক জাতীয় পার্টির জন্য।
নির্বাচনে মূলত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীদের সঙ্গে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে। সমালোচকেরা এ নির্বাচনকে ‘আমি আর ডামি’ নির্বাচন বলে আখ্যা দেন।
কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনে ছিলেন চারজন নির্বাচন কমিশনার—সাবেক সচিব মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ রাশেদা সুলতানা এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান।
এই তিনটি জাতীয় নির্বাচনেই আওয়ামী লীগ জয়ী হয় এবং টানা ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকে। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে।
এ ছাড়া, একই বছরের ডিসেম্বরে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর একটি অংশ বাতিল করে রায় দেয়। এতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরানোর পথ খুলে যায়।
রায়ে বলা হয়, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে না পারায় আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে হওয়া তিনটি নির্বাচনে জনগণের আস্থা বিনষ্ট হয়েছে।