ইমাম গাজ্জালী ঢাকা
![]() |
জলবায়ু পরিবর্তনে অভ্যন্তরীণ অভিবাসন বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে পরামর্শ সভায় বক্তব্য রাখছেন অতিথিরা। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, ২৫ জুন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
যুজলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে দেশের অন্তত ২ কোটি ৬০ লাখ মানুষ নিজ গ্রাম বা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে বসবাস করতে বাধ্য হতে পারেন—এমন আশঙ্কা জানিয়েছে উন্নয়ন সংস্থা কারিতাস বাংলাদেশ।
বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিবাসন ও নগর জীবনের বাস্তবতা: নীতিমালা বাস্তবায়নের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পন্থা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন কারিতাস বাংলাদেশের পরিচালক (কর্মসূচি) দাউদ জীবন দাশ। সভা সঞ্চালনায় ছিলেন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ড. জামিল আহমেদ। আলোচনায় অংশ নেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল, ডিআরইউর সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র, কারিতাসের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান অ্যালেক্সজান্ডার ত্রিপুরা প্রমুখ।
সভায় জানানো হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরিমাণ বেড়েছে। জার্মান সংস্থা জিআইজেড-এর ২০২৩ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, ২০০৮ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সময়ে এসব দুর্যোগে অন্তত ৪৭ লাখ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র যেতে বাধ্য হয়েছেন। শহরে আশ্রয় নেওয়া এসব মানুষদের মধ্যে ৫৭ শতাংশের বাড়ি উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায়।
সভায় সোহরাব হাসান বলেন, ‘উপকূলে হাজার হাজার একর ফসলি জমি মাছ চাষের জন্য ঘেরে রূপান্তরিত হচ্ছে। টেকসই বাঁধ না থাকায় দুর্যোগের সময় স্থানীয় মানুষ নিজেরাই বাঁধ রক্ষা করেন। সরকার বা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাহায্য ছাড়াই তারা নিজেরাই বাঁচার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।’
ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়, জোয়ার, লবণাক্ততা ও নদীভাঙনের কারণে উপকূলের মানুষ শহরে চলে আসছেন। এখানে তারা বস্তিতে খুবই কষ্টকর জীবন যাপন করছেন। এতে তাদের জীবনযাত্রার মান অনেকটা কমে যাচ্ছে। এসব মানুষকে নিরাপদে রাখতে হলে কেবল অবকাঠামো নয়, মনোভাবেও পরিবর্তন দরকার।’
সভায় আরও জানানো হয়, দুর্যোগ মোকাবেলায় কারিতাস এখন পর্যন্ত ১০ লাখের বেশি ঘর তৈরি, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও কমিউনিটি অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে প্রায় ৪ কোটি ৭০ লাখ মানুষকে সহায়তা দিয়েছে।
এ ছাড়া তারা ৩ হাজার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি ও ১৪ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। উপকূল ও বন্যাপ্রবণ এলাকার মানুষকে সুরক্ষা দিতে বিভিন্ন জেলায় ৩২৯টি ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করেছে কারিতাস।