নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে লালমনিরহাটে আটক হন সেলুনকর্মী পরেশ চন্দ্র শীল ও তাঁর ছেলে বিষ্ণু চন্দ্র শীল ছবি: সংগৃহীত

লালমনিরহাটে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি ও তাঁর ছেলেকে জনতার হাতে হেনস্তার ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দোষীদের বিচার দাবি করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে গত শুক্রবার মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)–কে নিয়ে ‘অবমাননাকর’ মন্তব্যের অভিযোগ তুলে একদল লোক রোববার লালমনিরহাট শহরের একটি সেলুন থেকে পরেশ চন্দ্র শীল (৬৯) ও তাঁর ছেলে বিষ্ণু চন্দ্র শীলকে (৩৫) টেনে বের করে মারধর করে এবং পরে তাঁদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।

আসক মনে করে, অতীতে এ ধরনের ঘটনার সঠিক বিচার না হওয়ায় এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। বিচারহীনতার এই সংস্কৃতি সমাজে অসহিষ্ণুতা ও আইনের শাসনের প্রতি অবজ্ঞার পরিবেশ তৈরি করছে। সংস্থাটি ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সবাইকে চিহ্নিত করে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, 'ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করা এবং ভুক্তভোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে হবে। একই সঙ্গে যেকোনো উসকানি, গুজব বা সংগঠিত সহিংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের কঠোর জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।' 

আসক মনে করে, ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি সম্মান ও ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা রাষ্ট্রের অন্যতম দায়িত্ব। তবে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে, তা প্রচলিত আইনের মাধ্যমে প্রমাণসহ নিষ্পত্তি হওয়া উচিত। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে কাউকে হেনস্তা করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

সংস্থাটি আরও বলেছে, 'এ ধরনের আচরণ শুধু আইনের শাসনের পরিপন্থী নয়, সমাজে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকেও বিনষ্ট করে। ধর্মীয় বিষয়ে অভিযোগ অত্যন্ত সংবেদনশীল হওয়ায় তদন্তে স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা ও তথ্যভিত্তিক বিচার নিশ্চিত করা জরুরি। একদিকে যেমন ধর্ম অবমাননা প্রচার করা আইনবিরুদ্ধ, তেমনি অপরাধ প্রমাণের আগে কাউকে সামাজিকভাবে হেয় করা বা সহিংসতার মুখে ঠেলে দেওয়াও সমানভাবে নিন্দনীয়।'