প্রতিনিধি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
![]() |
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাজশাহী নগরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। শুক্রবার দুপুরে তালাইমারীর বিজয় ২৪ চত্বরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
আওয়ামী লীগকে গণহত্যাকারী আখ্যা দিয়ে নিষিদ্ধের দাবিতে রাজশাহীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে নগরের তালাইমারীর বিজয় ২৪ চত্বরে তাঁরা এ কর্মসূচি পালন করেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে সমাবেশে অংশ নেন হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা।
এ সময় আন্দোলনকারীরা ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে, করতে হবে’, ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, আওয়ামী লীগ নো মোর’, ‘ব্যান ব্যান আওয়ামী লীগ’, ‘আওয়ামী লীগ বাইরে কেন? ইন্টেরিম জবাব চাই’, ‘গোলামি না আজাদি, আজাদি আজাদি’, ‘জুলাইয়ের হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, গণহত্যা পরিচালনার পর আওয়ামী লীগের আর বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোনো নৈতিক অধিকার নেই। অন্তর্বর্তী সরকারকে অবিলম্বে দলটিকে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং ট্রাইব্যুনালে বিচার শেষ করতে হবে।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক মাহায়ের ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশের ইতিহাসে আরেকটি “জুলাই” নেমে এসেছে। আজকে আমরা কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করতে আসি নাই। তবে রাজনীতির নামে যে দল গণহত্যা করেছে, চাঁদাবাজি করেছে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছে, তাদের নিষিদ্ধের দাবিতে এখানে এসেছি। আমাদের দাবি স্পষ্ট—যে মাটিতে আমাদের ভাই-বোন শহীদ হয়েছেন, সেই মাটিতে হত্যাকারীদের কোনো জায়গা হবে না। অনতিবিলম্বে বিচারিক প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।’
‘শেখ হাসিনা গিয়েছে যেই পথে, আওয়ামী লীগও যাবে সেই পথে’ বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন রাজশাহী মহানগর হেফাজতে ইসলামের সভাপতি মো. হাফেজ আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আজ এখানে দাঁড়ানোই আমাদের জন্য লজ্জাজনক বিষয়। যারা শত শত মানুষকে হত্যা করেছে, অসংখ্য নিরীহ মানুষের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে, একটি স্বাধীন দেশে তাদের নিষিদ্ধ চাওয়ার জন্য আন্দোলন করার থেকে লজ্জাজনক কিছু হতে পারে না।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মুজাহিদ ফয়সাল বলেন, ‘চব্বিশের জুলাইয়ে আওয়ামী লীগ যে গণহত্যা পরিচালনা করেছে, তা একাত্তরের ২৫ মার্চের গণহত্যার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। তবে একাত্তর সালে এ দেশে যে গণহত্যা পরিচালিত হয়েছিল, সেটা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক। কিন্তু ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে আমাদের দেশের সরকারই গণহত্যা পরিচালনা করেছে। আমাদের করের টাকায় কেনা অস্ত্র দিয়ে আমাদেরই ভাই-বোনদের হত্যা করা হয়েছে। এতগুলো গণহত্যা পরিচালনার পর আওয়ামী লীগের আর বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোনো নৈতিক অধিকার নেই।’
সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম। এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি মো. ফাহিম রেজা, মেহেদী সজীব, আকিল বিন তালেব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহীর সংগঠক মিলন আহমেদ, রাজশাহী কলেজ শাখা শিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান প্রমুখ।