প্রতিনিধি রাজশাহী
![]() |
লাশ | প্রতীকী ছবি |
রাজশাহীর বাঘায় বাড়ির পাশে এক ব্যবসায়ী খুন হয়েছেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার আরিপপুর গ্রাম থেকে ওই ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত ব্যবসায়ীর নাম সাদেক হোসেন (৫০)। তিনি উপজেলার বাজুবাঘা ইউনিয়নের আরিপপুর গ্রামের বাসিন্দা। সাদেক গরু ও ছাগল কেনাবেচার ব্যবসা করতেন।
ঘটনার পর থেকে সাদেক হোসেনের সৎ ভাই কামাল হোসেন পলাতক। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কামালের স্ত্রী, ছেলে ও বোনকে আটক করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাদেক হোসেনের দুজন স্ত্রী রয়েছেন। প্রথম পক্ষের স্ত্রী আরিপপুর গ্রামের আশেমা বেগম মানসিক প্রতিবন্ধী। তাঁর ঘরে দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে। বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে প্রথম স্ত্রী বাবার বাড়িতে থাকেন। আর সাদেক দ্বিতীয় বিয়ে করে স্ত্রী নাদিরা বেগমের সঙ্গে উপজেলার চণ্ডীপুর গ্রামে ঘরজামাই থাকেন। আরিপপুর গ্রামে সাদেকের নিজ বাড়ি পরিত্যক্ত রয়েছে। ব্যবসা ও জমির ফসল দেখাশোনার জন্য এই গ্রামে প্রায়ই তিনি আসেন। গতকাল রাতে মুঠোফোনে খবর পেয়ে পুলিশ তাঁর পরিত্যক্ত বাড়ির ৫০ মিটার পশ্চিমে মকবুলের আমবাগান থেকে সাদেকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে। তাঁর শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
খন্দকার আলালউদ্দিন নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, রাতে তিনি আরিপপুর মোড়ে আসছিলেন। সেখানে আলতাফ হোসেনের কীটনাশকের দোকানে মিন্টু, বুলবুলসহ তিনজন লোক তাঁর (খন্দকার আলালউদ্দিন) জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। ওই দোকান থেকে সড়কের দক্ষিণ দিকে সাদেকের বাড়ির পাশে আমবাগানের ভেতর লাইট বা মুঠোফোন জ্বলতে দেখা যায়। সেখানে কারা কী করছে, তা জানার জন্য আলালউদ্দিন ডাকাডাকি করেন, কিন্তু কোনো সাড়াশব্দ পাননি। পরে তিনি আলতাফ, মিন্টু ও বুলবুলকে সঙ্গে নিয়ে যেখানে আলো জ্বলছিল, সেখানে গিয়ে দেখেন সাদেকের লাশ পড়ে আছে।
পরে স্থানীয় লোকজন জড়ো হন। খবর দেওয়া হলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এ সময় পুলিশ সাদেক হোসেনের ভাই কামালের বাড়িতে যায়। তাঁকে খোঁজাখুঁজি করে। তাঁকে না পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কামাল হোসেনের স্ত্রী চায়না খাতুন, তাঁর সন্তান চন্দন এবং সাদেকের বোন সফেলা খাতুনকে থানায় নিয়ে যায়।
নিহত কামাল হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী নাদিরা বেগমের ভাষ্য, পূর্বশত্রুতার জেরে সাদেক হোসেনকে হত্যা করে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন তাঁর সৎ ভাই কামাল হোসেন। তাঁকে আটক করলে সব রহস্য বেরিয়ে আসবে। কামালের নামে থানায় মাদক, হত্যা, ডাকাতির মামলা রয়েছে।
বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আ ফ ম আছাদুজ্জামান আজ বেলা একটার দিকে বলেন, আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। সাদেকের ভাই কামালকে সন্দেহ করা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশ ঘটনার রহস্য উদ্ধারে সব ধরনের চেষ্টা করছে। লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যা মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।