প্রতিনিধি চুয়াডাঙ্গা

উদ্ধার করা বন্যপ্রাণীসহ বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট ও বন বিভাগের কর্মকর্তারা। রোববার দুপুরে দামুড়হুদার মেহেরুননেছা পার্ক ও মিনি চিড়িয়াখানায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় একটি বেসরকারি পার্ক ও মিনি চিড়িয়াখানায় যৌথ অভিযান চালিয়েছে বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট ও  সামাজিক বন বিভাগ। একটি পরিবেশবাদী সংগঠনের সহযোগিতায় আজ রোববার ইব্রাহিমপুর মেহেরুন্নেছা শিশুপার্ক ও মিনি চিড়িয়াখানায় এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে আটকে রাখা পাঁচটি বন্য প্রাণী উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার করা বন্য প্রাণীর মধ্যে ছিল তিনটি বানর, একটি হুতুম প্যাঁচা ও একটি মেছো বিড়াল। এগুলোকে পরবর্তী সময়ে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও কুষ্টিয়া জেলায় উপযুক্ত পরিবেশে অবমুক্ত করা হয়েছে। পার্কের মিনি চিড়িয়াখানায় দীর্ঘদিন অবৈধভাবে আটকে রাখা এসব বন্য প্রাণী অবমুক্তকরণের জন্য স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো দাবি জানিয়ে আসছিল। 

বন্য প্রাণী পরিদর্শক আবদুল্লাহ আস সাদিক ও অসীম মল্লিকসহ বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের সদস্যরা আজ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় সামাজিক বন বিভাগ, দামুড়হুদা উপজেলার বন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, জীবননগর উপজেলা বন কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম এবং পরিবেশবাদী সংগঠন ‘মানবতার জন্য’–এর সভাপতি আহসান হাবীব ও সাধারণ সম্পাদক শাহিন সরকার এবং সদস্য আবদুল মান্নান উপস্থিত ছিলেন।

পরিবেশবাদী সংগঠনটির নেতারা অভিযোগ করেন, ইব্রাহিমপুরে মেহেরুন পার্কে অনুমোদনহীন চিড়িয়াখানায় দীর্ঘদিন ধরে টিকিটের বিনিময়ে বন্য প্রাণী প্রদর্শন করা হচ্ছিল। প্রতিকূল পরিবেশে বন্য প্রাণীদের আটকে রেখে যন্ত্রণা দেওয়া, পরিচর্যা না করা এবং নিয়মিত খাবার না দেওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এমন অবস্থায় কথিত এই চিড়িয়াখানা বন্ধ এবং প্রাণীগুলোকে  উপযুক্ত পরিবেশে অবমুক্ত করতে জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগকে অনুরোধ জানিয়ে আসা হচ্ছিল।

বন্য প্রাণী পরিদর্শক আবদুল্লাহ আস সাদিক বলেন, বন্য প্রাণীগুলোকে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে আটক ও প্রদর্শন করা হচ্ছিল, যা বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২–এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ বিষয়ে বিভিন্ন সময় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর অভিযানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জব্দ বন্য প্রাণীগুলোকে প্রথমে বন বিভাগের হেফাজতে নেওয়া হয়। এরপর  প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শেষে পুনর্বাসনের অংশ হিসেবে মেছো বিড়ালকে চুয়াডাঙ্গায় ও মেহেরপুরে উপযুক্ত পরিবেশে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। হুতুম প্যাঁচাটিকে কুষ্টিয়া এলাকায় ছেড়ে দেওয়া হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে আবদুল্লাহ আস সাদিক বলেন, প্রয়োজনীয় তথ্য–উপাত্ত নেওয়া হয়েছে। ঢাকায় ফিরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে ওই মিনি চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলাসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।