প্রতিনিধি শরীয়তপুর

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গের সামনে নিহত সুজন সাহার মরদেহ ঘিরে স্বজনদের আহাজারি। মঙ্গলবার দুপুরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

শরীয়তপুর সদরের দক্ষিণ মধ্যপাড়া এলাকায় সুজন সাহা (৫০) নামের এক শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঝগড়ার একপর্যায়ে প্রতিবেশী চাচাতো ভাই সুদর্শন সাহা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা সুজনকে পেটান বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর পরিবার।

নিহত সুজন সাহা শরীয়তপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ মধ্যপাড়া এলাকার হরিদাস সাহার ছেলে। তিনি পৌর এলাকার আংগারীয়া উচ্চবিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগের শিক্ষক ছিলেন।

শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানা-পুলিশ সূত্র জানায়, সুজন সাহা ও অভিযুক্ত সুদর্শন সাহার পরিবার পাশাপাশি বসবাস করেন। জমিজমা নিয়ে পরিবার দুটির বিরোধ চলছিল। আজ বেলা একটার দিকে দুই পরিবারের নারী সদস্যদের ঝগড়া বাধে। ওই ঝগড়া থামানোর জন্য সুজন এগিয়ে যান। তখন সুদর্শন ও তাঁর লোকজন তাঁকে পেটান বলে অভিযোগ উঠেছে। সুজনকে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে স্বজনেরা দ্রুত তাঁকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। স্বজনেরা তাঁকে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় যাওয়ার পথে বেলা দুইটার দিকে জাজিরা এলাকায় তাঁর মৃত্যু হয়।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে সুজনের মরদেহ রাখা হয়েছে। তাঁর মৃত্যুর খবর শুনে আত্মীয়স্বজন ও সহকর্মীরা সেখানে ছুটে আসেন। মরদেহ ঘিরে আহাজারি করছিলেন স্ত্রী মিঠু রানী সাহা ও মেয়ে বিদ্যাদেবী।

মিঠু রানী সাহা বলেন, ‘সামান্য একটু জমির জন্য আমার স্বামীকে পিটিয়ে হত্যা করা হলো। আমার শিশুসন্তানদের নিয়ে এখন কোথায় যাব?’

সুজনের ভাই চঞ্চল সাহা বলেন, ‘আমাদের বসতবাড়ির জমি দখল করে ঘর নির্মাণ করেছেন সুদর্শন ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা প্রায়ই আমাদের পরিবারের নারী সদস্যদের গালমন্দ করেন। আজও তেমন করছিলেন। দাদা তাঁদের থামাতে গিয়েছিলেন। সুদর্শন ও তাঁর দোকানের কর্মচারীসহ কয়েকজনে মিলে দাদাকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছেন।’

অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্য জানতে সুদর্শন সাহা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে কাউকে পাওয়া যায়নি। তাঁরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। মুঠোফোনও বন্ধ রয়েছে।

পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন সন্ধ্যায় বলেন, ‘এক শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা করার খবর পেয়েছি। তবে কীভাবে ওই ঘটনা ঘটেছে, তা বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি। পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। ঘটনাটি নিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।’