প্রতিনিধি মৌলভীবাজার

রাস্তার দুই পাশে ফুটেছে কৃষ্ণচূড়াসহ নানা ফুল। ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে স্থানীয় লোকজন ও পর্যটকেরা ভিড় করছেন। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

বাংলার গ্রীষ্ম মানেই প্রকৃতির এক বিশাল ক্যানভাস, যেখানে রং ছড়ায় কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, সোনালু, জারুলের মতো বর্ণিল সব ফুল। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল শহর থেকে বের হয়ে ভানুগাছ-শ্রীমঙ্গল সড়ক ধরে সামনে এগিয়ে গেলে চোখে পড়ে প্রকৃতির এই মনোমুগ্ধকর ক্যানভাসের।

এখানে রাস্তার দুই পাশের কৃষ্ণচূড়া, জারুল, রাধাচূড়া, সোনালু ও জারুল ফুটে আছে প্রায় ১ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে। রাস্তার ওপর দিয়ে গাছের সবুজ পাতা ভেদ করে উঁকি দিচ্ছে রঙিন ফুলগুলো। এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন ভিড় করছেন শত শত মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দারা সকালে কিংবা বিকেলে হাঁটতে বের হয়ে কিছু সময় দাঁড়িয়ে থাকছেন ফুলগাছের নিচে। পরিবার নিয়ে আসছেন অনেকে। তরুণ-তরুণীদের হাতে মুঠোফোন বা ক্যামেরা, তাঁরা আগ্রহ নিয়ে নিজেদের ছবি তুলে রাখছেন, কেউ কেউ আবার ভ্লগ বানাচ্ছেন।

আগুনরঙা কৃষ্ণচূড়া | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা মৌসুমী আক্তার নামের এক দর্শনার্থী জানান, কয়েক দিন ধরে ফেসবুকে এই জায়গার ছবি ও ভিডিও দেখতে পাচ্ছেন। তাই পরিবারের সবাইকে নিয়ে এসেছেন। ফেসবুকের ছবি ও ভিডিও থেকেও এই জায়গা অনেক বেশি সুন্দর। তা ছাড়া এখানে অনেক পাখির ডাক জায়গাটিকে আরও রোমান্টিক করে দিয়েছে।

পলাশ বিশ্বাস নামের এক তরুণ জানান, শ্রীমঙ্গল এমনিতেই অনেক সুন্দর। রাস্তার দুই পাশে ফুলের কারণে জায়গাটি আরও সুন্দর হয়ে উঠেছে। তাঁরা বন্ধুরা মিলে এসেছেন। তাঁদের সবারই খুব ভালো লাগছে।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শ্রীমঙ্গল-ভানুগাছ সড়কের দুই পাশে ফিনলে টি–এর চা–বাগান। প্রায় ১০ বছর আগে ফিনলে ভাড়াউড়া ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক গোলাম মোহাম্মদ শিবলী নিজ উদ্যোগে রাস্তার দুই পাশে নানা ফুলের গাছ লাগান। এই গাছগুলোতে এখন ফুল ফুটছে। এদিকে ২০২৩ সালে শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে রাস্তার দুই পাশের প্রায় ৪ কিলোমিটার জায়গায় ফুলের গাছ লাগানো হয়। এই গাছগুলোর কিছু কিছু জায়গায় ফুল ফুটতে শুরু করেছে।

সোনালুর শোভা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

গোলাম মোহাম্মদ শিবলী বলেন, ‘প্রায় ১০ বছর আগে আমি বধ্যভূমি ৭১ প্রাঙ্গণে ফুলের গাছ লাগাই। পরের ভানুগাছ সড়কের রাস্তার দুই পাশে কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, জারুল, সোনালু ইত্যাদি গাছ আমি নিজ অর্থায়নে লাগাই। বাগানের শ্রমিকদের দিয়ে সেই গাছগুলোকে পরিচর্যা করি। সেই গাছগুলোতে এখন ফুল ফুটছে। পুরো রাস্তার চিত্রই পাল্টে গেছে। অনেক জায়গা থেকে লোকজন আসছেন এই জায়গায়। এটা আমাকে আনন্দ দেয়।’