প্রতিনিধি বগুড়া

বগুড়ার নন্দীগ্রাম থানা ঘেরাও করে জামায়াতের নেতা–কর্মীদের বিক্ষোভ। আজ রোববার সকালে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

বগুড়ার নন্দীগ্রামে সাংবাদিকের ওপর হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার আসামি ছাড়িয়ে নিতে থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে তাঁরা থানা ঘেরাও করে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

এ সময় নন্দীগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির আবদুর রহমান ও পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি আবদুল আলিম উপস্থিত ছিলেন। থানার প্রধান ফটকের সামনে দলটির নেতা-কর্মীরা প্রায় ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান করেন। পরে এজাহারভুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তারের পর থানা থেকে ছেড়ে দেওয়ার সুযোগ নেই, পুলিশের পক্ষ থেকে জানানোর পর তাঁরা থানা চত্বর থেকে চলে যান।

থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার রাতে নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সাংবাদিক নজরুল ইসলামের ওপর হামলা হয়। বর্তমানে তিনি বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হামলার শিকার নজরুল ইসলাম দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকার বগুড়া জেলা প্রতিনিধি এবং নন্দীগ্রাম উপজেলা প্রেসক্লাবের সদস্যসচিব।

ওই হামলার ঘটনায় গতকাল শনিবার রাতে নন্দীগ্রাম থানায় সাতজনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়। পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে এজাহারনামীয় তিন আসামি উপজেলার বুড়ইল এলাকার মোহাম্মদ জাকারিয়া ইসলাম, আতিকুল ইসলাম ও কইগাড়ি গ্রামের আবদুর রহিমকে গ্রেপ্তার করে।

জাকারিয়া ইসলাম জামায়াতের যুব বিভাগের বুড়ইল ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়াডের সেক্রেটারি, আতিকুল ইসলাম জামায়াতের শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের বুড়ইল ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি এবং আবদুর রহিম শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের নেতা।

নন্দীগ্রাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু মুসা সরকার বলেন, সাংবাদিক নজরুল ইসলামের ওপর হামলা মামলার এজাহারনামীয় আসামি আবদুর রহিম বুড়ইল ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হলেও তাঁকে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের নেতা দাবি করে ছাড়িয়ে নিতে জামায়াত-শিবিরের নেতা–কর্মীরা আজ সকালে থানা চত্বরে এসে অবস্থান নেন। পরে উপজেলা জামায়াতের আমিরসহ শীর্ষ নেতাদের জানানো হয়, আইন মেনেই পুলিশ এজাহারনামীয় আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। আদালত থেকে জামিন নেওয়া ছাড়া থানা থেকে কোনো মামলার আসামিকে ছেড়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। পরে নেতারা তাঁদের দলীয় কর্মীদের নিয়ে থানা ত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে জানতে নন্দীগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির আবদুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে নন্দীগ্রাম পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি আবদুল আলিম বলেন, নজরুল ইসলাম নামধারী সাংবাদিক এবং ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে নজরুল ইসলাম জামায়াত-শিবিরের বহু নেতা–কর্মীকে হয়রানি–নির্যাতন করেছেন। তাঁর ওপর হামলাকারীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও জামায়াত-বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে মামলা করা হয়েছে। এমনকি উপজেলার দুজন সাংবাদিককেও আসামি করা হয়েছে। জামায়াতের তিনজনকে গ্রেপ্তার করায় নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে থানায় অবস্থান নিয়েছিলেন। পরে নেতা-কর্মীদের শান্ত করে থানা থেকে বাইরে নিয়ে আসা হয়েছে।