রাজশাহীতে প্রধান শিক্ষকের চেয়ার আমগাছ থেকে নামানো হলো, খুলেছে কক্ষের তালাও
প্রতিনিধি রাজশাহী
![]()  | 
| প্রধান শিক্ষকের চেয়ার আমগাছ থেকে নামানো হয়েছে। কক্ষের তালাও খোলা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে রাজশাহীর পবা উপজেলার বাগধানী উচ্চবিদ্যালয়ে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন | 
রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভার একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের চেয়ার আমগাছ থেকে নামানো হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁর অফিস কক্ষের তালাও খুলে দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে আজ শুক্রবার পবা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, তিনি এ বিষয়ে অবগত নন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিষয়টি সম্পর্কে অবগত থাকতে পারেন।
ইউএনও আরাফাত আমান আজিজ বলেন, প্রধান শিক্ষকের কক্ষ তালাবদ্ধ করাটা দুঃখজনক। এটা ছিল বিদ্যালয়ের কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব। এ বিষয়ে তিনি সেনাবাহিনীকে ফোন করেছিলেন। আজ সকালে সেনা সদস্যরা কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে সেখানে গিয়েছিলেন। তাঁরা কিছু সময় থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছেন। এর আগেই কে বা কারা তালা খুলে দিয়েছে এবং চেয়ারও নামিয়েছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নওহাটা পৌরসভার বাগধানী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে টেনেহিঁচড়ে বের করে কক্ষে তালা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন প্রধান শিক্ষক মঞ্জু মনোয়ারা। তাঁর অভিযোগ, বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা তাঁকে মারধরও করেছেন।
এ ঘটনায় তাঁর চেয়ার পাশেই একটি পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার সেই চেয়ার বিদ্যালয়ের পাশে একটি আমগাছে ঝুলিয়ে রাখে কে বা কারা। প্লাস্টিকের দড়ি দিয়ে চেয়ারটি বেঁধে রাখা হয়। গতকাল প্রধান শিক্ষকের কক্ষের দুটি দরজায় তালা দেখা যায়। তবে আজ শুক্রবার সকালে গিয়ে দেখা গেছে, আমগাছের সেই চেয়ার আর নেই। চেয়ারটি দেখা গেল প্রধান শিক্ষকের অফিসের সামনে। তবে এটি ভাঙা। প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষে লাগানো তালাও খুলে দেওয়া হয়েছে।
![]()  | 
| রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভার বাগধানী উচ্চবিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের বসার চেয়ার ঝুলছে বিদ্যালয়ের পাশের আমগাছে। বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন | 
রফিকুল ইসলামের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নাজিম উদ্দিন মোল্লা ওরফে নজির। তিনিও পৌরসভা বিএনপির সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। নজির পৌরসভা বিএনপির সাবেক সভাপতি শেখ মো. মকবুল হোসেনের ঘনিষ্ঠ। এই পক্ষ বিদ্যালয়ের এ কমিটিকে মেনে নেয়নি। মঙ্গলবার কমিটির লোকজনকে নিয়ে সভা করার কথা ছিল প্রধান শিক্ষকের। সেখানে পৌরসভা বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলামের যাওয়ার কথা ছিল। তবে তিনি যাওয়ার আগে সেখানে একপর্যায়ে উত্তেজনা ছড়ায়। পরে দুই পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষককে বাইরে বের করে তাঁর কক্ষে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় সেদিন দুপুরে প্রধান শিক্ষক পবা থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এতে নওহাটা পৌরসভার বাঘাটা গ্রামের মতির ছেলে ও পৌরসভা যুবদলের মো. আতাউর (৩৫), বাগসারা গ্রামের কফিলের ছেলে বাগাসারা উচ্চবিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক ও পৌরসভা যুবদলের মো. মকসেদ আলী (৩৫), পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নাজিম উদ্দিন মোল্লা ওরফে নজির (৫০), বাগধানী গ্রামের আতর আলীর ছেলে মো. জমসেদসহ (৪০) অজ্ঞাতনামা আরও ১০ থেকে ১২ জনকে অভিযুক্ত করেন।
‘আমরা তালা লাগাইনি, চেয়ারও আম গাছে ঝুলাইনি’
এদিকে প্রধান শিক্ষককে টেনেহিঁচড়ে বের করে দিয়ে অফিস কক্ষে তালা, ও মারধরের অভিযোগের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে বিএনপির একটি পক্ষ। আজ বেলা ১১টার দিকে পবা উপজেলা প্রেসক্লাবে তাঁরা এই সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, তাঁরা প্রধান শিক্ষককে মারধর করে চেয়ার বের করেননি। কক্ষে তালাও লাগাননি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নাজিম উদ্দিন মোল্লা ওরফে নজির, পৌর যুবদলের সাবেক সদস্য ও বাগাসারা উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক মো. মকসেদ আলী, পৌর যুবলীগ নেতা মো. আতাউর রহমান প্রমুখ। 
![]()  | 
| বাগধানী উচ্চ বিদ্যালয়ের বিষয় নিয়ে বিএনপির একটি পক্ষ সংবাদ সম্মেলন করেছে। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে পবা উপজেলা প্রেসক্লাবে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন   | 
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘ওই দিন বিদ্যালয়ে আমরা 
গিয়েছিলাম। সেখানে বাইরে থেকে সভাপতি করায় প্রতিবাদ জানিয়েছি। রাজশাহী 
শিক্ষাবোর্ডকেও এ ব্যাপারে অবহিত করেছি। সেখান থেকে আমরা চলে আসার পর হয়তো 
কে বা কারা তালা লাগিয়েছে। চেয়ার পুকুরে ফেলে দিয়ে আবার গাছে ঝুলিয়েছে কারা
 তা আমরা জানি না। হয়তো আমাদের ফাঁসানোর জন্য অন্য পক্ষ এটা করেছেন। এই 
সবের সঙ্গে আমরা জড়িত নই।’ 
আরও পড়ুন
| 
      
       প্রধান শিক্ষকের কক্ষে তালা, চেয়ার ঝুলছে আমগাছে  | 
  



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন