প্রতিনিধি রাজশাহী
চারঘাটে নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তব্য দিচ্ছেন রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ। আজ বৃহস্পতিবার উপজেলার চৌরাস্থা এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ বলেছেন, চারঘাটে বালু উত্তোলন হচ্ছে অবৈধভাবে, কিন্তু পুলিশ নীরব দর্শক। তারা রাতে গিয়ে বালুর ট্রাকের টাকা গুনে নিচ্ছে। বালু উত্তোলন বন্ধে কোনো ভূমিকা নেই।
চারঘাট উপজেলায় পদ্মা নদীর ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহীর চারঘাটের চৌরাস্তায় আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এই মানববন্ধন হয়। চারঘাটের পিরোজপুর, গোপালপুর, মেরামতপুর ও চন্দনশহরসহ ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষ বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে মানববন্ধনে অংশ নেন।
কর্মসূচিতে বিএনপি নেতা আবু সাইদ বলেন, ‘চারঘাটের পিরোজপুর, গোপালপুর, মেরামতপুর ও চন্দনশহর এলাকায় পদ্মা নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে। সাধারণত যখন পানি বাড়ে তখন নদীতে ভাঙন হয়। কিন্তু এখন শুষ্ক মৌসুমেই বিঘার পর বিঘা জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ঘরবাড়ি নদীগর্ভে যাওয়ার আতঙ্কে মানুষ রাতে ঘুমাতে পারছে না।’
পুলিশের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নদী ভাঙন রোধে স্থানীয় প্রশাসন, ইউএনও, এসি ল্যান্ড প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বিভিন্ন জায়গায় পাঠাচ্ছেন। এ জন্য তাঁদের দোষ দিতে পারছি না। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, চারঘাট বলে একটা থানা আছে, ওসি আছে, পুলিশ আছে, কিন্তু এদের কোনো কাজ নেই। এরা বিগত সময়ে যেগুলো করছে, এখনো সেগুলোই করছে। ফেনসিডিলের টাকা, মদের টাকা, চোরাচালানের টাকার সঙ্গে এই পুলিশ বাহিনী জড়িত। বালু উত্তোলন হচ্ছে অবৈধভাবে। পুলিশ নীরব। রাতে তারা বালুর ট্রাকের টাকা গুনে নিচ্ছে। পুলিশ হিসেবে তাদের কোনো ভূমিকা নেই।’ তিনি প্রশাসনের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনার প্রশাসনের কাছে আজকেই শেষ কথা। সেদিন ডিআইজি সাহেবকে বলেছি।’ তিনি বলেন, ‘একটা ফালতু ওসি। যে ওসির কোনো কাজ নাই। সে ওসি চারঘাটে থাকতে পারবে না। একটা ভালো ওসি, সুন্দর ওসি, যে ওসি পুলিশের সম্মান রাখতে পারবে, আমাদের সম্মান রাখতে পাবে, তাকে দেন। তারপরও যদি কাজ না হয়, জনগণকে নিয়ে এর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিএনপির এই নেতা ওসির উদ্দেশে বলেন, ‘আইন যে ভঙ্গ করছে, সে বিএনপির লোক হয়ে থাকলেও খাতির করছেন কেন, তাকে ধরেন। পরিষ্কার কথা আমার, আমি নিজে অন্যায় করে থাকলে আমাকেও ধরেন। যারা ঘাট দখল করে খাবে, চাঁদাবাজি করে খাবে তার দায়ভার বিএনপি নেবে না।’
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকিরুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক শাহিনুর রহমান, উপজেলা বিএনপির সহসাংগঠনিক মাসুদ রানা, পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুল মমিন, পৌর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সালেক, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান ও রাজশাহী জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাব্বির রহমান প্রমুখ।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে চারঘাট থানার ওসি মিজানুর রহমানকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি।