[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

নাগরিক সমাজের সঙ্গে মতবিনিময়: রাজনৈতিক ও নাগরিক অধিকারচর্চার খোঁজ নিলেন লু

প্রকাশঃ
অ+ অ-

ডোনাল্ড লুকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (উত্তর আমেরিকা অনুবিভাগ) খন্দকার মাসুদুল আলম। মঙ্গলবার, ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে | ছবি: মার্কিন দূতাবাসের এক্স থেকে নেওয়া

কূটনৈতিক প্রতিবেদক: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক ও নাগরিক অধিকারের চর্চা কতটা অবাধে হচ্ছে, তা জানতে চেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।

মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকায় নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতিবিনিময় সভায় বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির পাশাপাশি এখানকার অর্থনীতি, শ্রম অধিকার, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়েও ডোনাল্ড লু জানতে চেয়েছেন। আলোচনায় ফিলিস্তিন পরিস্থিতিও গুরুত্ব পেয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু তিন দিনের ঢাকা সফরের প্রথম দিনে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বাসায় এই মতবিনিময় সভা হয়। এ সময় গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রেক্ষাপটে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়ে ডোনাল্ড লু বাংলাদেশের এই নাগরিক প্রতিনিধিদের মত জানতে চান। এ সময় তাঁরা ফিলিস্তিন পরিস্থিতি, বিশেষ করে গাজায় ইসরায়েলের নৃশংসতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিক্ষোভ দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকার বেশ সমালোচনা করেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার–এর সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম, বাংলাদেশ সেন্টার ফর উইমেন ওয়ার্কার্স সলিডারিটির নির্বাহী পরিচালক কল্পনা আক্তার, মানবাধিকারকর্মী মো. নুর খান, চাকমা সার্কেলের রানি ও মানবাধিকারকর্মী ইয়ান ইয়ান, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক আন্দোলনের সংগঠক সোহানুর রহমান এবং তরুণ সংগঠক মাহমুদা আক্তার (মনীষা)।

মতবিনিময় সভা শেষে বাইরে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সোহানুর রহমান বলেন, নির্বাচন–পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতি, মানবাধিকার, শ্রম অধিকার, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলা, মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতিসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, ডোনাল্ড লু নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের কাছে নির্বাচন–পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান। বিশেষ করে রাজনৈতিক পরিবেশ কেমন, নাগরিক সমাজ কোন অবস্থায় কাজ করছে ইত্যাদি। তখন ডোনাল্ড লুকে জানানো হয়, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের ক্ষেত্র সামগ্রিকভাবে সংকুচিত হয়েছে।

এ পর্যায়ে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চেয়েছিল। নির্বাচন হয়ে গেছে, সরকার তার মতো করে কাজও করছে। এমন পরিস্থিতিতে এমন চাপ কেন; এমনটা তাঁরা আশা করেননি। এটা উদ্বেগের।

আলোচনায় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রেক্ষাপটে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং পরবর্তী সময়ে প্রণয়ন করা সাইবার নিরাপত্তা আইনের প্রসঙ্গও আসে। এ বিষয়ে শোনার পর ডোনাল্ড লু নিজের উদ্বেগের কথা জানান।

গাজায় ফিলিস্তিনিদের গণহত্যা বন্ধ এবং এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে কি না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা প্রায় সবাই ফিলিস্তিন পরিস্থিতির নিন্দা জানান এবং এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার সমালোচনা করেন। পাশাপাশি তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনিদের সহমর্মিতায় আয়োজিত বিক্ষোভ দমনে যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

ডোনাল্ড লু বাংলাদেশের শ্রম অধিকারের বিষয়েও জানতে চেয়েছেন বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রমিকনেতা কল্পনা আক্তার বলেন, শ্রম আইনের সংস্কার ও তৈরি পোশাকশিল্পের কর্মীদের বেতন নিয়ে আন্দোলনের সময় যেসব মামলা হয়েছিল, সেগুলোর পরিস্থিতি সম্পর্কেও ডোনাল্ড লু জানতে চেয়েছেন।

তিন দিনের সফরে ডোনাল্ড লু আজ সকালে কলম্বো থেকে ঢাকায় আসেন। তাঁকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (উত্তর আমেরিকা অনুবিভাগ) খন্দকার মাসুদুল আলম। বিমানবন্দর থেকে ডোনাল্ড লু সরাসরি বারিধারায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে যান। সেখান থেকে তিনি পিটার হাসের বাসায় মতবিনিময় সভায় যোগ দেন। সন্ধ্যায় তিনি প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বাসায় নৈশভোজে অংশ নেন।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন