[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচন: কে জিতলেন, কে হারলেন, তাতে কী পরিবর্তন ঘটছে

প্রকাশঃ
অ+ অ-

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন দেশটির নাগরিকেরা। ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র। ৮ নভেম্বর |  ছবি: এএফপি

বিবিসি, ওয়াশিংটন: যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনের যে ফলাফল এখন পর্যন্ত ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে সিনেটে ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকান পার্টি এগিয়ে আছে। উভয় কক্ষের গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু আসনে দুই দলেরই জয়ের সম্ভাবনা আছে।

সিনেটের নিয়ন্ত্রণ কাদের হাতে যাবে, তা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা অঙ্গরাজ্যগুলোর মধ্যে পেনসিলভানিয়া ইতিমধ্যে হারিয়েছে রিপাবলিকান পার্টি।

সিনেটের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ৫১টি আসন। এখন নেভাডা, অ্যারিজোনা ও জর্জিয়ায় সিনেট আসনের ফলে বোঝা যাবে কোন দল সিনেটের নিয়ন্ত্রণ পাচ্ছে। এখন এ তিন অঙ্গরাজ্যের ফলাফলের দিকে সবার চোখ। তবে এ পর্যন্ত ঘোষিত ফলাফলে প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্রেটিক পার্টির ১৭৮টি আসনের বিপরীতে ১৯৯টি নিজেদের পক্ষে পেয়েছে রিপাবলিকান পার্টি। নির্বাচনের আগে যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল, তাতে এবার রিপাবলিকানদের বিজয়ের কথা বলা হচ্ছিল। বাস্তবে তেমনটি হয়নি। নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে কী ফলাফল হয়েছে এবং তাতে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের নীতিনির্ধারণীতে কী কী প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি।

প্রতিনিধি পরিষদে জয়ের পথে রিপাবলিকানরা
তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়া কিছু আসনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থীরা জয় পেলেও সার্বিক ফলে দেখা যাচ্ছে, কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ পাওয়ার পথেই রয়েছে রিপাবলিকান পার্টি। তবে কত বেশি আসনে দলটি জয়ী হবে, তা এখন বড় প্রশ্ন। নিম্নকক্ষের ৪৩৫ আসনের মধ্যে ১৯৯টিতে জয় পেয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থীরা।

২০২০ সালের নির্বাচনে ভালো ফল করে সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন রিপাবলিকান প্রার্থীরা। নিম্নকক্ষের নিয়ন্ত্রণ পেতে অল্প কিছু আসনে জয় প্রয়োজন ছিল দলটির। রিপাবলিকান পার্টি যদি শেষ পর্যন্ত নিম্নকক্ষের নিয়ন্ত্রণ পায়, তাহলে ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাট সরকারকে আইন পাস করতে বেগে পেতে হবে। এমনকি বাইডেন প্রশাসনের অনেক বিষয় নিয়ে তারা তদন্ত শুরু করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ফ্লোরিডায় রন ডিস্যান্টিস পুনর্নির্বাচিত
চার বছর আগে নির্বাচনে জিতে ফ্লোরিডার গভর্নর হয়েছিলেন রিপাবলিকান রন ডিস্যান্টিস। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী অ্যান্ড্রু গিলামের বিপক্ষে অল্প ভোটের ব্যবধানে জয় পান তিনি। বিগত চার বছরে গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ইস্যু, যেমন ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকার ও বর্ণবাদ বিষয়ে তাঁর জানাবোঝা আরও শাণিত হয়েছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে জারি বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে তিনি রাস্তায় নেমেছিলেন। এসবের মধ্য দিয়ে রক্ষণশীলদের কাছে আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন রন ডিস্যান্টিস। এবার তিনি জয় পেয়েছেন বড় ব্যবধানে।

ডিস্যান্টিসের জয়ের পর তাঁর সমর্থকদের মিছিল থেকে স্লোগান উঠেছে আরও দুই বছর তিনি ক্ষমতায় থাকছেন। কিন্তু গভর্নরের মেয়াদ তো চার বছর। মূলত এই স্লোগানের মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, ডিস্যান্টিস ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হতে চাইলে তাঁকে মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার দুই বছর আগে পদত্যাগ করতে হবে।    

পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আবার রিপাবলিকান পার্টির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামতে চান সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর সেই নির্বাচনে যেন দলীয় মনোনয়নের দৌড়ে না শামিল হন, সে জন্য দলের সম্ভাব্য প্রার্থী রন ডিস্যান্টিসকে রীতিমতো হুমকি দিচ্ছেন ট্রাম্প। তাঁরা দুজনই ফ্লোরিডার অধিবাসী।

ট্রাম্পের মিশ্র অনুভূতির রাত
এই নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রার্থী ছিলেন না। তবে ব্যালটে পেপারে ছিল তাঁর ছায়া। ভোটের দিন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মার-আ-লাগোর বাসভবন থেকে নির্বাচন নিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন ট্রাম্প। তিনি দাবি করেছেন, এই নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হিসেবে যাঁদের তিনি সমর্থন দিয়েছেন, তাঁরা বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়েই জিতছেন।  

তবে ট্রাম্পের দাবি কতটা সত্য, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ট্রাম্প এবার মূলধারার রক্ষণশীলদের বাইরে গিয়ে প্রার্থীদের সমর্থন দিয়েছেন। তাঁর সমর্থিত প্রার্থীদের কেউ কেউ ইতিমধ্যে পরাজিত হয়েছেন। যেমন পেনসিলভানিয়ায় মেহমেত ওজকে সমর্থন দিয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু তিনি হেরে গেছেন। অন্যদিকে জর্জিয়ায় হারশেল ওয়াকারের প্রতি সমর্থন ছিল ট্রাম্পের। সেখানে কেউ ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পাননি। এখন সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া দুই প্রার্থীর মধ্যে আবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা (রানঅফ) করতে হতে পারে। আর অ্যারিজোনায় ট্রাম্প-সমর্থিত ব্লেক মাস্টার ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর চেয়ে পিছিয়ে আছেন। শুধু ওহাইওতে ট্রাম্পের সমর্থন পাওয়া জেডি ভেন্স জয়ী হয়েছেন।

হতাশ করেছেন ডেমোক্র্যাট তারকারা
২০১৮ সালে টেক্সাসে বেটো ও’রুক এবং জর্জিয়ায় স্টেসি আব্রামস গভর্নর পদে লড়াই করে অল্প ভোটের ব্যবধানে হেরে যান। তবে হেরে গেলেও দলীয় সমর্থকদের মন জয় করেছিলেন ডেমোক্রেটিক পার্টির এই দুই প্রার্থী। দলীয় প্রচারণার জন্য তহবিল সংগ্রহ এবং তৃণমূলে জনপ্রিয়তার কারণে অনেকে তাঁদের দলের ভবিষ্যৎ হিসেবে দেখেন। এবার নির্বাচনে তাঁরা যখন আবার গভর্নর পদের জন্য প্রচারণা শুরু করেন, তখন সমর্থকদের আশা ছিল দুজনই জিতবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁরা হেরে গেছেন।  

বিগত নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ব্রায়ান কেম্পের কাছে অল্প ভোটের ব্যবধানে হারেন আব্রামস। তবে এবার আরও বেশি ব্যবধানে হেরেছেন তিনি। এদিকে ও’রুক গত নির্বাচনে সিনেটর টেড ক্রুজের চেয়ে এবার রিপাবলিকান গভর্নর গ্রেগ অ্যাবটের কাছে বড় ব্যবধানে হেরেছেন। এখন ডেমোক্র্যাটদের নতুন তারকা খুঁজতে হবে।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন