[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

রাজশাহীতে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল আওয়ামী লীগের কার্যালয়, ইট-রড খুলে নিয়ে যাচ্ছেন লোকজন

প্রকাশঃ
অ+ অ-
শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবর পেয়ে রাজশাহীর কুমারপাড়ায় নগর আওয়ামী লীগের পরিত্যক্ত কার্যালয় বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবরে হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে রাজশাহীতে বিক্ষোভকারীরা এস্কেভেটর দিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয় গুঁড়িয়ে দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে নগরের কুমারপাড়ায় অবস্থিত আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙার কাজ শুরু হয়। ভোর ৪টার দিকে ভবনটি পুরোপুরি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে শুক্রবার সকালে ভবনটি থেকে ইট-রড খুলে নিয়ে যান ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী ও ছিন্নমূল মানুষেরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে সিঙ্গাপুর থেকে হাদির মৃত্যুর খবর পৌঁছানোর পর জুলাই–৩৬ মঞ্চ, এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হয়ে হাদির হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে স্লোগান দেন। পরে তাঁরা মিছিল নিয়ে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে যান।

শুক্রবার সকালে গুঁড়িয়ে দেওয়া আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে ইট-রড খুলে নিয়ে যান কয়েকজন ব্যক্তি | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

এ সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে আসা শিক্ষার্থীরাও তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন। পরে রাস্তার ওপর আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা।

বিক্ষোভ চলাকালে ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘হাদি ভাই মরলো কেন, ইন্টেরিম জবাব দে’, ‘রুখে দাও জনগণ, ভারতীয় আগ্রাসন’—এ ধরনের স্লোগান দেওয়া হয়।

পরে বিক্ষোভকারীরা আবার মিছিল নিয়ে সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে ফিরে যান। সেখানে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা সমাবেশ করেন তাঁরা। ওই সমাবেশে রাজশাহী মহানগর এনসিপির সভাপতি মোবাশ্বের আলী, সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান, রাকসুর জিএস ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মারসহ অন্য নেতারা বক্তব্য দেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ওসমান হাদির হত্যাকারীকে ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনারের সব কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হবে। পাশাপাশি সব ধরনের ভারতীয় পণ্য বর্জন এবং ভারতীয় নাগরিকদের ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করে ভারতে পাঠানোর দাবি জানান তাঁরা।

সমাবেশ শেষে বিক্ষোভকারীরা আবারও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। রাত দেড়টার দিকে সেখানে একটি এস্কেভেটর আনা হয়। সেটি দিয়ে কার্যালয় ভাঙা শুরু হয়। রাত আড়াইটার দিকে আরও একটি এস্কেভেটর আনা হয়। দুটি এস্কেভেটর ব্যবহার করে রাত ৪টার মধ্যে পুরো কার্যালয়টি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর এনসিপির সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগের কার্যালয় গুঁড়িয়ে দিয়েছি। সিটি করপোরেশনকে বলা হয়েছে সেখান থেকে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নিতে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের কাছে আমরা দাবি জানাবো, সেখানে একটি গণশৌচাগার নির্মাণ করার জন্য।’

রাজশাহী মহানগর এনসিপির সভাপতি মোবাশ্বের আলী বলেন, ‘এই সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। আমরা মনে করি, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ করা উচিত।’

তিনি আরও বলেন, ‘অন্যান্য দেশে বড় কোনো ঘটনা ঘটলে দায়িত্বশীলরা পদত্যাগ করেন। কিন্তু আমাদের দেশের সংস্কৃতি হলো, জুতা দিয়ে পেটালেও তারা পদত্যাগ করে না। তাই আমরা মনে করি, এ সরকারের সব উপদেষ্টার পদত্যাগ করে একটি বিপ্লবী সরকার গঠন করা দরকার।’

মোবাশ্বের আলী বলেন, ‘আজ আমরা আওয়ামী লীগের এই কার্যালয় গুঁড়িয়ে দিয়েছি। শুধু কার্যালয় গুঁড়িয়ে দিলে হবে না। চিরুনি অভিযান চালিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের গ্রেপ্তার করতে হবে।’

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন