[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

৩০ বছরের জন্য লালদিয়া টার্মিনাল পরিচালনা করবে মায়ার্সকের এপিএম টার্মিনালস

প্রকাশঃ
অ+ অ-

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল তৈরি ও ৩০ বছরের জন্য পরিচালনার দায়িত্ব পাচ্ছে ডেনমার্কভিত্তিক এপিএম টার্মিনালস। এটি এপি মোলার মার্সক গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে টার্মিনাল নির্মাণে কোম্পানিটি ৫৫ কোটি ডলার বা প্রায় ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও এপিএম টার্মিনালসের মধ্যে চূড়ান্ত চুক্তি আগামী সপ্তাহে স্বাক্ষর হবে। চুক্তি স্বাক্ষরের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশকে ২৫০ কোটি টাকা ‘সাইনিং মানি’ দেবে। ঢাকায় চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এপিএম টার্মিনালসের গ্লোবাল চেয়ারম্যান এবং ডেনমার্কের একজন মন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন।

আজ বুধবার অর্থনৈতিক বিষয়–সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের কমিটি চুক্তির বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে। পরে বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সরকারের এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান ও পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল সৈয়দ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য কমোডর আহমেদ আমিন আবদুল্লাহ।

আশিক চৌধুরী জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ শুরু হতে পারে। তিন বছরের মধ্যে নির্মাণ শেষ করে ২০২৯ সালে টার্মিনাল চালু করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এরপর ৩০ বছর টার্মিনালটি পরিচালনা করবে এপিএম টার্মিনালস। প্রয়োজন হলে উভয় পক্ষ চাইলে চুক্তি আরও ১৫ বছর বাড়াতে পারবে।

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকার পানগাঁও ইনল্যান্ড কনটেইনার টার্মিনাল চালুর বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান জানান, আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে আরেকটি চুক্তি স্বাক্ষর হবে।

আশিক চৌধুরী বলেন, ‘লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে ইউরোপ থেকে আসা সবচেয়ে বড় প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ। এতে সরকারের কোনো টাকা লাগবে না। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৫৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা পুরোপুরি বহন করবে এপিএম টার্মিনালস। আগামী তিন বছরে এই অর্থ বাংলাদেশে আসবে এবং পুরো অঙ্কটি এফডিআই হিসেবে গণ্য হবে।’

আশিক চৌধুরী জানিয়েছেন, লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল বছরে ৮ থেকে ১০ লাখ টিইইউ (কনটেইনারের আন্তর্জাতিক একক) পর্যন্ত কনটেইনার পরিচালনা করতে পারবে। বর্তমান চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতার তুলনায় এটি প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি হবে। ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের সামগ্রিক কনটেইনার হ্যান্ডেলিং ক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পাবে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, লালদিয়া টার্মিনালের অবস্থান হবে পতেঙ্গার চট্টগ্রাম বোট ক্লাবের পাশে, কর্ণফুলী নদীর তীরে। সমুদ্রের কাছে হওয়ায় এখানে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের তুলনায় দ্বিগুণ আকারের জাহাজ ভিড়তে পারবে। এর ফলে সিঙ্গাপুর বা শ্রীলঙ্কায় ট্রান্সশিপমেন্টের প্রয়োজন কমবে, টার্ন অ্যারাউন্ড সময় কমবে, রপ্তানি দ্রুততর হবে এবং সরাসরি ইউরোপে যাতায়াতের সুযোগ তৈরি হবে। টার্মিনালটি ২৪ ঘণ্টা চলবে। নতুন টার্মিনালে সরাসরি ৫০০ থেকে ৭০০ জনকে চাকরি দেওয়া হবে।

ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালস বিশ্বে প্রায় ৬০টি টার্মিনাল পরিচালনা করছে। বিশ্বের শীর্ষ ২০টি টার্মিনালের মধ্যে ১০টি পরিচালনা করছে এটি।

পিপিপি কর্তৃপক্ষের সিইও আশিক চৌধুরী বলেন, টার্মিনাল নির্মাণ করবে ডেনমার্কের প্রতিষ্ঠান হলেও মালিকানা থাকবে বাংলাদেশ সরকারের। এপিএম টার্মিনালস নতুন জমিতে টার্মিনাল নির্মাণ করবে এবং ৩০ বছর পরিচালনার পর সম্পূর্ণ টার্মিনাল সরকারের কাছে হস্তান্তর করবে।

বন্দর ব্যবহারকারীদের জন্য চার্জ নির্ধারণে সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকবে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ একটি সীমা নির্ধারণ করবে, যাতে অতিরিক্ত মাশুল না নেওয়া হয়। অপারেটর চাইলে মানসম্মত সেবা দিয়ে কিছুটা বেশি চার্জ নিতে পারবে, তবে নিয়ন্ত্রিত সীমার মধ্যে। সব টার্মিনাল চালু হলে কয়েক বছর পরে এই সীমা ধাপে ধাপে তুলে দেওয়া হবে। 

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন