ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙতে আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি বাংলাদেশ
![]() |
| ট্রফি হাতে মেহেদী হাসান মিরাজ ও শাই হোপ | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
বাংলাদেশের মাঠের পারফরম্যান্স কেমন হবে, তা সময়ই বলবে। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজটি স্বাগতিক দলের ব্যর্থতার ক্লান্তি ঝেড়ে নতুন করে জেগে ওঠার সুযোগ।
আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ধরে গত বছর নভেম্বর থেকে টানা পাঁচটি সিরিজ হেরেছে বাংলাদেশ। এই সময়ে ১৪টি ওয়ানডে খেলে জিতেছে মাত্র দুটিতে। মরুর দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে সর্বশেষ আফগানিস্তানের কাছে হয়েছে ধবলধোলাই। প্রথমবারের মতো আফগানদের কাছে এমন হার ভুলে যাওয়ার আগেই এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নামছে বাংলাদেশ।
এই সিরিজেই সেই যন্ত্রণার ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার আশায় বাংলাদেশ। অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজও খুব একটা ভালো সময় পার করছে না। আরব আমিরাতেই গত মাসে আইসিসির সহযোগী সদস্য নেপালের কাছে টি–টোয়েন্টি সিরিজ হেরেছে তারা। তার আগের জুলাইয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্টে নিজেদের মাঠে ২৭ রানে অলআউট হয়ে হারের লজ্জা পায় ক্যারিবীয়রা।
ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা ভেঙে বাংলাদেশ যখন নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে, তখন ঘরের মাঠে প্রতিপক্ষ হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পাওয়া মন্দ নয়। তবে এসব কেবল কাগজে–কলমে হিসাব। মাঠের পারফরম্যান্সই শেষ কথা। থাকলে কি আর নিজেদের ‘প্রিয়’ সংস্করণে একের পর এক সিরিজ হারত বাংলাদেশ!
নেপালের কাছে টি–টোয়েন্টি সিরিজ হার বা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্টে ২৭ রানে অলআউট হওয়া মানেই নয় যে ওয়ানডেতেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ দুর্বল দল। এই সংস্করণে গত পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় সিরিজের তিনটিতেই (ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের বিপক্ষে) জিতেছে তারা। আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে সিরিজ ড্র করেছে, হেরেছে কেবল ইংল্যান্ডের কাছে।
তবু বাংলাদেশ কিছুটা স্বস্তি পেতে পারে—এই দলে নেই রশিদ খানের মতো বিশ্বমানের স্পিনার। আফগান সিরিজে স্পিনারদের বিপক্ষে বাংলাদেশের ব্যাটিং ছিল নড়বড়ে। বাজে শট নির্বাচন, প্রি–ডিটারমাইন্ড শট খেলা আর টেকনিকের দুর্বলতায় ব্যাটাররাই দায়ী ছিল সেই ধবলধোলাইয়ের জন্য। এসব থেকে রাতারাতি বেরিয়ে আসা সহজ নয়।
তবে এবার বাংলাদেশ খেলবে নিজের চেনা মাঠে, পরিচিত কন্ডিশনে। তার চেয়েও বড় কথা, ব্যর্থতা পেছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়ানোর তাগিদ কাজ করছে দলে।
আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কোচ ফিল সিমন্স বললেন, ‘আমরা জানি, (আফগান সিরিজের পারফরম্যান্সের চেয়ে) আমরা অনেক ভালো দল, আমরা আরও ভালো খেলতে পারি।’
বাংলাদেশের লড়াই সেই ‘ভালোটা’ বের করে আনার। আগের কী হয়েছে, তা নয়—নির্দিষ্ট দিনে মাঠে কী হচ্ছে, সেটাই নির্ধারণ করবে ম্যাচের ফল।
ক্যারিবীয় দলের ব্যাটিং–ভরসা শাই হোপও বললেন, ‘ক্রিকেটে জয় নির্ভর করে দিনের পারফরম্যান্সের ওপর। অতীতের ফলাফল যা–ই হোক না কেন, মাঠে যে দল ভালো খেলে, সেই দলই জেতে। আমরা জানি, বাংলাদেশ ঘরের মাঠে অত্যন্ত শক্তিশালী দল।’
তবে হোপের মনে আছে এক আশঙ্কাও—বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ব্যর্থতা তাদের আরও ভালো খেলতে অনুপ্রাণিত করবে। হোপের সেই আশঙ্কাটাই এখন বাংলাদেশের আশার জায়গা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন