সুন্দরবনে নৌকা থেকে ৪৮ কেজি হরিণের মাংস উদ্ধার, আটক ১
![]() |
কয়রা উপজেলার শাকবাড়িয়া নদীর তীরে সোমবার মধ্যরাতে অভিযান চালিয়ে বনরক্ষীরা হরিণের মাংস ও মাছ উদ্ধার করেন | ছবি : বন বিভাগের সৌজন্যে |
রাতের অন্ধকারে সুন্দরবনের গহিন বনে হরিণ শিকার করে মাংস নিয়ে ফিরছিলেন একদল শিকারি। সত্যপীরের খাল পেরিয়ে শাকবাড়িয়া নদী ধরে নৌকাটি যখন লোকালয়ের দিকে এগোচ্ছিল, তখন হাজির হন কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনের বনরক্ষীরা।
বনরক্ষীদের উপস্থিতি টের পেয়ে এক শিকারি নদীর তীরে লাফিয়ে পালিয়ে যান, আরেকজন ধরা পড়েন। ওই নৌকা থেকে উদ্ধার করা হয় একটি ঝুড়ি ও চারটি কর্কশিটে বরফে রাখা প্রায় ৪৮ কেজি হরিণের মাংস ও ৮০ কেজি বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
ঘটনাটি গত সোমবার মধ্যরাতে কয়রা উপজেলার শাকবাড়িয়া নদীর তীরে ঘটে। মঙ্গলবার সকালে আটক ব্যক্তি ও উদ্ধার করা মাংস নিয়ে বনরক্ষীরা কাশিয়াবাদ ফরেস্ট কার্যালয়ে ফেরেন।
কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনের কর্মকর্তা নাসির উদ্দীন বলেন, 'আমরা শাকবাড়িয়া নদীতে টহল দিচ্ছিলাম। নদীর এক পাশে লোকালয়, অন্য পাশে সুন্দরবন। হঠাৎ দেখি, একটি নৌকায় দুজন ব্যক্তি সন্দেহজনকভাবে বসে আছেন। কাছে যেতেই একজন নদীর তীরে লাফিয়ে পালান, আরেকজনকে আটক করি। নৌকায় বরফে ঢাকা পাত্রে হরিণের মাংস ও মাছ ছিল। সঙ্গে সুন্দরবনে মাছ ধরার বড় চরেপাতা জালও পাওয়া গেছে।'
আটক ব্যক্তির নাম দিদারুল ইসলাম (৩৫), বাড়ি কয়রার মহারাজপুর গ্রামে। পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তি ১ নম্বর কয়রা গ্রামের মনিরুল ইসলাম সরদার।
বন বিভাগ জানিয়েছে, এ ঘটনায় কয়রা বন আদালতে মামলা করা হচ্ছে। আদালতের নির্দেশে উদ্ধার করা হরিণের মাংস বিনষ্ট করা হবে। জব্দ করা মাছগুলো ইতিমধ্যে পচে নষ্ট হয়ে গেছে।
সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা এলাকার বাসিন্দারা জানান, শিকারিরা সাধারণত কোনো প্রস্তুত ফাঁদ বহন করে নিয়ে যান না। মাছ ধরার জালের সঙ্গে দড়ি নিয়ে বনে যান এবং তা দিয়ে ‘ডোয়া’ নামের ফাঁদ বানান। হরিণ ফাঁদে আটকা পড়লে তারা বনরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে জবাই করে মাংস লোকালয়ে আনে এবং পরে ফাঁদগুলো মাটির নিচে পুঁতে রাখে।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা এ জেড এম হাছানুর রহমান বলেন, 'হরিণ শিকারে আমাদের অবস্থান সম্পূর্ণ ‘জিরো টলারেন্স’। শিকার হওয়া মাংস উদ্ধার কোনো সাফল্য নয়, প্রকৃত সাফল্য হলো হরিণকে শিকারের আগে রক্ষা করা। আমরা হরিণের মাংসের ক্রেতা, বিক্রেতা ও শিকারিদের চিহ্নিত করছি। গোয়েন্দা তৎপরতা আরও জোরদার করা হয়েছে। তথ্যদাতার পরিচয় গোপন রেখে পুরস্কার দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।'
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন