[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

অচলাবস্থার পর পুরোদমে ক্লাস–পরীক্ষা শুরু, নির্বাচনের প্রচারণা তুঙ্গে

প্রকাশঃ
অ+ অ-

ক্যাম্পাস সচল হওয়ায় প্রচারণা শুরু করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীরা। রোববার দুপুরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪ দিন বন্ধ থাকার পর রোববার থেকে সব ধরনের কার্যক্রম আবার শুরু হয়েছে। সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো ছিল। রাকসু নির্বাচনের প্রার্থীরাও বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে সকাল থেকেই প্রচারণায় নেমেছেন। বন্ধ থাকার পর ক্যাম্পাস আবার উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রশাসন ভবন ও একাডেমিক ভবনসহ বিভিন্ন দপ্তরের তালা খোলা। কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কাজ করছেন। বাসও সময়মতো চলাচল করছে। শিক্ষার্থীরা ক্লাসের ফাঁকে দলবেঁধে আড্ডা দিচ্ছেন। ক্যাম্পাসের সব ভ্রাম্যমাণ দোকান খোলা। রাকসু নির্বাচনের বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা শিক্ষার্থীদের কাছে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

সিয়াম আহম্মেদ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘রোববার ক্লাস শুরু হয়েছে। প্রার্থীরা ভোট চাইছে। আমাদের চাওয়া, ক্যাম্পাসের পরিবেশ ভালো থাকুক। রাকসু নির্বাচনে যারা নির্বাচিত হবেন, তারা যেন আমাদের অধিকার নিয়ে কাজ করেন এবং সমস্যায় পাশে থাকেন।’

সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে লিফলেট বিতরণ করতে দেখা গেছে ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী নাফিউল ইসলামকে (জীবন)। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিতব্য রাকসু নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে নির্বাচন কমিশন নতুন তারিখ নির্ধারণ করেছে। দীর্ঘদিনের অচলাবস্থার পর শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরে এসেছে। ক্লাস–পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখেছি। আশা করি, ১৬ অক্টোবর নির্বাচন সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে।’

‘রাকসু ফর র‌্যাডিক্যাল চেঞ্জ’ প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী মেহেদী মারুফ সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেট ও টুকিটাকি চত্বরসহ ক্যাম্পাসে প্রচারণা চালান। তিনি বলেন, ‘উদ্ভূত পরিস্থিতির পর শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরেছে। ক্লাসের ফাঁকে আড্ডা দিচ্ছে। সকাল থেকে প্রচারণা চলছে। শিক্ষার্থীরা ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছে। তবে অনেকের মনে এখনো নির্বাচনের ব্যাপারে সংশয় আছে।’

‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেলের মহিলাবিষয়ক প্রার্থী সামসাদ জাহান বলেন, ‘প্রচারণা নতুনভাবে শুরু হয়েছে। প্রার্থীরা লিফলেট বিতরণ করছে। আমরা চাই আগের নির্বাচনী আমেজ ফিরে আসুক। সবাইকে নিয়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক।’ 

রাকসু, হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের প্রচারণার নতুন সময়সূচি ঘোষণা করা হয়েছে। প্রার্থীরা রোববার সকাল ৮টা থেকে ১৪ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত প্রচারণা চালাতে পারবেন। তথ্যটি জানানো হয়েছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এফ নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে।

রাকসুর কোষাধ্যক্ষ ও প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা সেতাউর রহমান বলেন, আগে প্রচারণা সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলত। নতুন সময়সূচি অনুযায়ী, সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত প্রচারণা চলবে, শুধু শেষ দিন ১৪ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত। তিনি সকলকে আচরণবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।

মূলত, ২৫ সেপ্টেম্বর রাকসু নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ১৮ সেপ্টেম্বর প্রশাসন ১০টি শর্তে পোষ্য কোটা ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে। ২০ সেপ্টেম্বর জুবেরী ভবনে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এরপর শিক্ষক ফোরাম ও কর্মকর্তা–কর্মচারীরা কর্মবিরতি পালন করেন, ফলে ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

পরিস্থিতি বিবেচনা করে ২২ সেপ্টেম্বর জরুরি সভা করে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন ১৬ অক্টোবর করার সিদ্ধান্ত নেয়। ২৪ সেপ্টেম্বর কর্মকর্তা–কর্মচারীরা সাত দিনের সময়সীমা দিয়ে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন। একই সঙ্গে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম ও ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব) দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাসে তাদের কর্মবিরতি স্থগিত করে।

২৯ সেপ্টেম্বর থেকে শারদীয় দুর্গোৎসবের ছুটিতে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বাড়ি চলে যান। ২ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটি শেষ হওয়ার পর ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরছেন। শুক্র ও শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি শেষে রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস, পরীক্ষা ও দাপ্তরিক কাজ শুরু হয়েছে। 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন