২৪ ঘণ্টার মধ্যে পোষ্য কোটা না ফিরলে কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি
![]() |
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় | ফাইল ছবি |
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা পুনর্বহালসহ ৩ দফা দাবিতে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ সময়ের মধ্যে দাবিগুলো না মানলে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।
আজ বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম, অফিসার্স সমিতি ও সহায়ক কর্মচারী সমিতির এক যৌথ বিবৃতিতে এই আলটিমেটামের ঘোষণা দেওয়া হয়।
এদিকে ২৫ সেপ্টেম্বর রাকসু, হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ ধরনের কর্মসূচির ঘোষণা নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থী ও প্রার্থীরা। তবে নির্বাচন কমিশন বলছে, এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের বিষয়। এতে নির্বাচনে কোনো প্রভাব পড়বে না।
শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘোষিত তিনটি দাবি হলো প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা (পোষ্য কোটা) অবিলম্বে বাস্তবায়ন; বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচলিত সব ‘প্রশাসক প্রথা’ বাতিল এবং সব শিক্ষকের জন্য ব্যক্তিগত চেম্বারের সুব্যবস্থা নিশ্চিত ও শিক্ষা-গবেষণার মানোন্নয়নে গবেষণা খাতে অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল আলীম বলেন, ‘আমরা অনেক দিন থেকেই প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে আসছিলাম। প্রশাসনের আশ্বাসে ভেবেছিলাম, আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হবে। যেহেতু দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এ সুবিধা বহাল আছে। কিন্তু এত দিনেও মেনে না নেওয়ায় আমরা আবার কর্মসূচিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
রাকসু নির্বাচনকে পুঁজি করে শিক্ষক-কর্মকর্তারা দাবি আদায়ের চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার। তিনি বলেন, ‘এই সময়ে এসে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এ ধরনের কর্মসূচি হতাশাজনক। রাকসু নির্বাচনকে পুঁজি করে তাঁরা নিজেদের দাবি আদায়ের নেওয়ার চেষ্টা করছেন। আমি ক্যাম্পাসের সব প্রার্থীদের যার যার অবস্থান থেকে এই অযৌক্তিক দাবির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তোলার দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল আলীম বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের জন্য রাকসু নির্বাচনের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। নির্বাচন নির্ধারিত তারিখেই অনুষ্ঠিত হবে। এখনো সময় আছে, আমাদের দাবি মেনে নিলে আমরা নির্বাচনের আগেই কর্মসূচি প্রত্যাহার করব।’
এদিকে ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘কোনো মীমাংসিত ইস্যুকে সামনে এনে রাকসু নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করা অথবা ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী ও প্রশাসনকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে রাকসু বানচালের পাঁয়তারা করলে, আমরা শিক্ষার্থীরা তা মেনে নেব না। এটা নিয়ে কোনো ধরনের টালবাহানা করলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।’
এ বিষয়ে রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম বলেন, এটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিষয়। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারভুক্ত নয়। আশা করছেন, নির্বাচনের আগেই প্রশাসন তাঁদের সঙ্গে বসে বিষয়টি সমাধান করবে।
এর আগে ২ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব পোষ্য কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন