প্রতিনিধি মানিকগঞ্জ
![]() |
মাথায় পুলিশের হেলমেট পরিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমানকে আদালতে নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মানিকগঞ্জ আদালত প্রাঙ্গণে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
মানিকগঞ্জ–১ (ঘিওর, দৌলতপুর ও শিবালয়) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক নাঈমুর রহমানের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তাঁকে জেলার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজিরের পর ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। পরে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক সাদবীর ইয়াছির।
নাঈমুর রহমানকে আদালতে আনার খবরে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা আদালত প্রাঙ্গণে ভিড় করেন। তাঁরা আসামির সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি তুলে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দাবিতে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড–সংলগ্ন মানরা এলাকায় শান্তিপূর্ণ সমাবেশে ছাত্র–জনতার ওপর আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করেন দলটির নেতা–কর্মীরা। এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী ও মানুষ গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় গত বছরের ৩ ডিসেম্বর সাদিকুল ইসলাম নামের এক যুবক বাদী হয়ে নাঈমুর রহমানসহ আরও বেশ কয়েকজনকে আসামি করে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। এতে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেককে প্রধান আসামি করা হয়। এ ছাড়া নাঈমুর রহমানের বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর থানায় আরও একটি মামলা আছে। সেখানে তাঁকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীদের ওপর হামলার পর গুরুতর আহত করার অভিযোগে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে তাঁর বিরুদ্ধে মামলাটি করেন উপজেলা যুবদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক শাহীন আলম।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, গত বছরের ৪ আগস্ট ছাত্র–জনতার শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আসামিরা গুলি ছোড়েন। এ ছাড়া ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হন অনেক শিক্ষার্থী। কেউ কেউ পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। আসামি নাঈমুর রহমান অস্ত্রের সরবরাহকারী ছিলেন।
গতকাল বুধবার রাতে রাজধানীর লালমাটিয়া এলাকা থেকে নাঈমুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল। এরপর রাতেই তাঁকে মানিকগঞ্জে নিয়ে সদর থানা–পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
২০০১ সালে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক ছিলেন নাঈমুর রহমান। পরে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ–১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, নিয়োগ–বাণিজ্যসহ দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২৪ অক্টোবর সাবেক এই সংসদ সদস্য ও তাঁর স্ত্রীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন ঢাকার একটি আদালত।