শেখ হাসিনার পক্ষে সরকারি খরচে আইনজীবী, নিয়োগ ঘিরে বিতর্ক
![]() |
শেখ হাসিনা | গ্রাফিক:পদ্মা ট্রিবিউন |
আন্তর্জাতিক অপরাধ বিচার ট্রাইব্যুনালের আদালত অবমাননার এক মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও গোবিন্দগঞ্জের শাকিল আকন্দ বুলবুলের পক্ষে সরকারি খরচে নিযুক্ত আইনজীবী অ্যাডভোকেট আমিনুল গনি টিটুকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
ট্রাইব্যুনাল-১ গত ১৯ জুন এই মামলায় রাষ্ট্রের পক্ষে যিনি আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করছিলেন, সেই টিটুকেই আসামি পক্ষের আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেন। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আইনি অঙ্গনে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন উঠেছে—একজন ব্যক্তি যিনি অতীতে হাসিনার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিষোদগার করেছেন, তিনি কীভাবে তাঁর পক্ষে আদালতে দাঁড়ান?
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়ার দিন, আমিনুল গনি টিটু সামাজিক মাধ্যমে একটি লেখা দেন। সেখানে তিনি হাসিনাকে 'মিথ্যাবাদী' বলে উল্লেখ করেন এবং তাঁর ফাঁসির দাবিও তোলেন।
এই পটভূমিতে তাঁর নিয়োগে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দেশের বিশিষ্ট আইনজীবীরা। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, 'একজন আইনজীবী যদি কারও বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অবস্থান নেন, তাহলে তাঁর পক্ষ হয়ে তিনি কীভাবে আদালতে যুক্তি তুলে ধরবেন—এটা একটা বড় নৈতিক প্রশ্ন।'
তিনি আরও বলেন, 'বিচারপ্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বজায় রাখতে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য ভাবমূর্তির আইনজীবীকেই নিয়োগ দেওয়া উচিত।'
এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান সরকারি আইনজীবী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, 'এটি বিচার ট্রাইব্যুনালের বিষয়। আমি এ নিয়ে মন্তব্য করতে পারি না।'
এদিকে সামাজিক মাধ্যমেও এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। কেউ কেউ টিটুর পুরোনো ফেসবুক পোস্টে মন্তব্য করে লিখেছেন, 'স্যার, আপনি তো শেখ হাসিনার ফাঁসি চেয়েছিলেন, এখন তাঁর পক্ষে আদালতে কীভাবে যাবেন?' কেউ লিখেছেন, 'এই হচ্ছে আসামিপক্ষের আইনজীবী!'
জানা গেছে, ট্রাইব্যুনাল শুধু প্রতিরক্ষা পক্ষে আইনজীবী নিয়োগই দেয়নি, পাশাপাশি মামলার সার্বিক সহায়তার জন্য জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মাসিউজ্জামানকে 'আদালতের বন্ধু' হিসেবেও নিযুক্ত করেছে।
এর আগে শেখ হাসিনা ও শাকিল আকন্দ বুলবুলের নামে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন পাঠানো হয়েছিল। তবে তাঁরা কেউই নির্ধারিত তারিখে আদালতে আসেননি।
এই মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি ২৫ জুন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন