প্রতিনিধি গাইবান্ধা

সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস উপলক্ষ্যে শোভাযাত্রা, গোবিন্দগঞ্জ  | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

সোমবার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নরঙ্গাবাদ হরিণমারি সাঁওতালপল্লীতে ‘সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি’, ‘বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন’ ও ‘সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংহতি কমিটি’ যৌথভাবে সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস পালন করেছে। শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করা হয়।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, সিধু-কানু, চাঁদ-ভৈরবীর নেতৃত্বে ১৮৫৫ সালের এই বিদ্রোহ অন্যায়ের বিরুদ্ধে শোষিত মানুষের এক সাহসী প্রতিবাদ হিসেবে ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছিল। ব্রিটিশদের শাসন কাঁপিয়ে তোলার পাশাপাশি স্থানীয় জমিদার ও মহাজনদের শোষণ থেকে মুক্তির পথ দেখিয়েছিল এই আন্দোলন।

বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত মাহাতো বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও সাঁওতালরা এখনো তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। ২০১৬ সালে গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালদের বসতঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট এবং তিনজনকে হত্যা করা হলেও আজও সেই ঘটনার বিচার সম্পন্ন হয়নি।’ তিনি সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম এলাকার তিন ফসলি জমিতে ইপিজেড না করার আহ্বান জানান।

আয়োজনের শুরুতে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা এলাকা প্রদক্ষিণ করে। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অন্যদিকে উপজেলার কামদিয়া ইউনিয়নের সাতানা ‘আলোর ঘর’ শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের মাঠে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘অবলম্বন’-এর উদ্যোগেও সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস পালিত হয়। সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি গনেশ মুরমুর সভাপতিত্বে সেখানে সভা হয়।

সভায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়নের সভাপতি রেবেকা সরেন, সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত মাহাতো, আদিবাসী পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট বাবু রবিদাস, ভূমিহীন আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক নাসেরউদ্দিন মোল্লা, সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাফরুল ইসলাম প্রধান, আদিবাসী নেতা মিল্টন হেমব্রম, রমিল হেমব্রম, সিপিবি নেতা যোগেশ্বর বর্মন ও তাজুল ইসলাম প্রধান।

সভায় রেবেকা সরেন বলেন, ‘১৮৫৫ সালের ৩০ জুন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন আর জমিদার-মহাজনদের শোষণের বিরুদ্ধে সাঁওতালদের এই ঐতিহাসিক বিদ্রোহ সংগঠিত হয়েছিল। এখনো সেই বিদ্রোহ আমাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে অনুপ্রাণিত করে।’