আহসান হাবীব ঢাকা

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং সার্চ ইঞ্জিনের ‘জিরো ক্লিক’ পদ্ধতি অনলাইনে অর্থ আয়ের প্রচলিত পদ্ধতিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে  | প্রতীকী ছবি

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং সার্চ ইঞ্জিনের ‘জিরো ক্লিক’ পদ্ধতি কনটেন্ট নির্মাতাদের প্রচলিত আয়ের কাঠামোকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। নতুন এ পদ্ধতি ইন্টারনেটে কাজের ধরন ও অনলাইনে অর্থ আয়ের প্রচলিত পদ্ধতিকে পুরোপুরি ধ্বংস করতে পারে বলে জানিয়েছেন ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ক্লাউডফ্লেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ম্যাথিউ প্রিন্স।

সম্প্রতি কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ম্যাথিউ প্রিন্স বলেন, অনলাইনে তথ্য অনুসন্ধানের ধরন বদলে যাওয়ায় ওয়েবসাইটগুলো আগের মতো দর্শক পাচ্ছে না। এতে আয় কমে যাচ্ছে কনটেন্ট নির্মাতাদের। ওয়েবের আয়কাঠামো দেড় দশক ধরে নির্ভর করছে অনলাইন সার্চের ওপর; অর্থাৎ অনলাইনের অধিকাংশ কর্মকাণ্ডের পেছনে ছিল সার্চ ইঞ্জিন। একসময় গুগলে কিছু সার্চ করলে ব্যবহারকারীকে পাঠানো হতো সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে। এটা ছিল একধরনের ভারসাম্যপূর্ণ বিনিময়।

বর্তমানে গুগল আগের মতোই তথ্য সংগ্রহ করলেও নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে দর্শক পাঠানোর সংখ্যা অনেক কমে গেছে। এ বিষয়ে প্রিন্স বলেন, ‘গুগলের সার্চ পেজেই ৭৫ শতাংশ প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাচ্ছেন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। ফলে মূল ওয়েবসাইটে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ছে না। এ কারণে যেসব ওয়েবসাইট বিজ্ঞাপন, নিবন্ধন বা পাঠকপ্রিয়তার মাধ্যমে আয় করত, তাদের জন্য পরিস্থিতি কঠিন হয়ে পড়েছে।’

ওয়েবে কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের আয় কমার পেছনে এআই প্রযুক্তিও ভূমিকা রাখছে বলে মনে করেন প্রিন্স। তিনি বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন এআই প্রতিষ্ঠান ওয়েব থেকে বিপুল পরিমাণ কনটেন্ট সংগ্রহ করে নিজেদের মডেল প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, কিন্তু সেই কনটেন্টের উৎসে ব্যবহারকারীদের ফেরত পাঠাচ্ছে না। গুগলের ক্ষেত্রে আগে ছিল ২:১ অনুপাত, এখন সেটা ৬:১। কিন্তু ওপেনএআইয়ের ক্ষেত্রে সেটা ২৫০:১, আর অ্যানথ্রপিকের ক্ষেত্রে ৬,০০০:১; অর্থাৎ তারা হাজার হাজার পেজ সংগ্রহ করলেও সেই ওয়েবসাইটে কোনো দর্শক পাঠাচ্ছে না, যা দীর্ঘ মেয়াদে ওয়েবের ভবিষ্যতের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। কনটেন্ট নির্মাতারা যদি আয় না করতে পারেন, তাহলে তাঁরা আর নতুন কনটেন্ট তৈরি করবেন না। এতে পুরো ইন্টারনেট–ব্যবস্থাই ভেঙে পড়বে।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে