প্রতিনিধি হবিগঞ্জ
![]() |
হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল শনিবার ‘কৃষি, জলবায়ু পরিবর্তন ও জীববৈচিত্র্য’বিষয়ক বৈজ্ঞানিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয় | ছবি: বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের সৌজন্যে |
হবিগঞ্জ জেলা ছিল বন, নদী ও জলাভূমির এলাকা। কিন্তু শিল্পায়ন ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে এই এলাকার নদী ও বাতাস দূষিত হয়েছে, আর হাজার হাজার একর জমি হারিয়ে গেছে। একসময় যে বরাক নদ বালাগঞ্জ থেকে হবিগঞ্জ হয়ে কালনী নদীতে মিলিত হতো, এখন সেটি মানচিত্রেই কেবল রয়েছে। শনিবার দুপুরে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কৃষি, জলবায়ু পরিবর্তন ও জীববৈচিত্র্য’বিষয়ক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন।
হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য মাছুমা হাবিব। অনুষ্ঠানে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৈয়দ সায়েম উদ্দিন আহম্মদ।
উদ্বোধনী পর্বে হর্টিকালচার বিভাগের প্রভাষক জাকারিয়া চৌধুরীর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের পরিচালক অরুণ চন্দ্র বর্মণ। হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এটাই প্রথম বার্ষিক বৈজ্ঞানিক সেমিনার।
উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাছুমা হাবিব বলেন, ‘আমাদের দেশের কৃষি, প্রাকৃতিক সম্পদ ও জীববৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখতে হলে বৈজ্ঞানিক গবেষণা, যথাযথ নীতিমালা ও স্থানীয় সম্প্রদায়ের সক্রিয় সহযোগিতা অপরিহার্য। আমরা সেন্টিনেল-৫ ট্রোপোমল ডেটার মাধ্যমে বাংলাদেশজুড়ে শহর, ল্যান্ডফিল, মাছ চাষ ক্ষেত্রসহ বিভিন্ন উৎস থেকে নির্গত মিথেন গ্যাসের মানচিত্র তৈরি করছি, যা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে আমাদের পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিচ্ছে।’
উপাচার্য সৈয়দ সায়েম উদ্দিন আহম্মদ বলেন, ‘হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা ব্যবস্থার প্রথম বৈজ্ঞানিক সেমিনার আয়োজন একটি মাইলফলক, যা আমাদের কৃষি, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য গবেষণায় টেকসই উন্নয়ন এবং জ্ঞান বিকাশের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।’
অনুষ্ঠানে ‘খাদ্যনিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন ও হবিগঞ্জ জেলায় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ: একটি দশ বছরের রোডম্যাপ’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কৃষাণ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবেদ চৌধুরী।
সেমিনারে দুটি বৈজ্ঞানিক অধিবেশন ও একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম অধিবেশনে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফসল উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবুবকর সিদ্দিকের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মৌলভীবাজার আঞ্চলিক কৃষি গবেষণাকেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহমুদুল ইসলাম নজরুল। এই অধিবেশনে সাতটি গবেষণার ফলাফল উপস্থিত হয়।
বৈজ্ঞানিক অধিবেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ইফতেখার আহমেদ ‘হবিগঞ্জের গুঙ্গিয়াজুরি হাওরের বিগত দুই দশকে ভূমি ব্যবহারের ও ভূমি আবরণের স্থানকালীন বিশ্লেষণ’ শীর্ষক গবেষণা উপস্থাপন করেন।