নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
![]() |
ছুরিকাঘাত | প্রতীকী ছবি |
রাজধানীর জিগাতলা ও মোহাম্মদপুরে দুই তরুণকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে এসব ঘটনা ঘটে। জিগাতলার ঘটনায় চারজন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিরা বলছেন, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা তাঁদের ওপর হামলা চালিয়েছেন।
জিগাতলায় নিহত
সামিউর রহমান ওরফে আলভী (২৭) ধানমন্ডির একটি কলেজের ছাত্র। তিনি হাজারীবাগে
বিজিবি ৫ নম্বর ফটক–সংলগ্ন বাসায় ভাড়া থাকতেন। মোহাম্মদপুরে নিহত নুর
ইসলাম (২৪) ভাড়ায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ছবি তুলতেন। তিনি ধানমন্ডির শংকর
এলাকার একটি মেসে থাকতেন।
হাজারীবাগ থানা–পুলিশ বলছে, জিগাতলায়
আড্ডা দেওয়ার সময় সামিউর ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের ওপর ছুরি নিয়ে হামলা চালায় একটি
পক্ষ। এতে সামিউর নিহত হন। আহত হন তাঁর সঙ্গে থাকা চারজন। তাঁরা হলেন
ইসমাইল হোসেন, জাকারিয়া, আশরাফুল ও দৃশ্য। তাঁদের বয়স ২০ থেকে ২৫ বছর।
প্রত্যেকের শরীরে সামান্য আঘাতের চিহ্ন আছে। তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ইসমাইল দাবি করেন, তিনি মোটরসাইকেলে
রাইড শেয়ারিং করেন। আহত অন্যরা বিভিন্ন কলেজে পড়েন। তিনি দাবি করেন,
সামিউরসহ বন্ধুরা জিগাতলায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। এ সময় কিছু
বুঝে ওঠার আগেই কিশোর গ্যাংয়ের ৪০ থেকে ৫০ জন সদস্য ছুরি নিয়ে তাঁদের ওপর
হামলা চালায়। তবে কী কারণে হামলা চালিয়েছে তা জানেন না বলে তাঁরা জানান।
সামিউরের বন্ধু তানভীর হাসান রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বলেন, লোকমুখে তিনি জানতে পারেন, জিগাতলায় সামিউর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে পাশের জাপান–বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক মো. ফারুক বলেন, রাত নয়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সামিউরকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর পিঠ, কোমর ও ডান হাতে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন সামিউরের স্বজনেরা। তাঁরা বলেন, কারা কেন সামিউরকে খুন করেছেন, তা তাঁরা জানেন না। সামিউরের এক স্বজন বলেন, বিকেলে সামিউরের জিগাতলায় ফুফুর বাসায় যাওয়ার কথা ছিল।
হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, জিগাতলায় সামিউর তাঁর সহযোগীদের নিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় সামিউরের প্রতিদ্বন্দ্বী একটি পক্ষ ধারালো অস্ত্র ও ছুরি নিয়ে হামলা চালায়। একপর্যায়ে সামিউর তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রতিপক্ষের হামলায় সামিউর নিহত ও তাঁর চার সহযোগী আহত হন।
এদিকে মোহাম্মদপুরের জাফরাবাদ পুলপাড় থেকে একজন রিকশাচালক রক্তাক্ত অবস্থায় আলোকচিত্রী নুর ইসলামকে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে স্বজনেরা রাত সাড়ে নয়টার দিকে স্বজনেরা এসে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর ঘাড়ের বাঁ পাশে, কানের নিচে ও হাতে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
নুর ইসলামের বড় ভাই ওসমান গনি বলেন, নুর ইসলাম ও তিনি ধানমন্ডির শংকর এলাকার একটি মেসে থাকেন। তার ভাই ভাড়ায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ছবি তুলতেন। ঘটনার পর তাঁর ভাইয়ের কাছ থাকা দুটি ক্যামেরা পাওয়া যায়নি। হত্যাকাণ্ডের কারণ নিয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান। তাদের গ্রামের বাড়ি বরিশালের আগৈলঝাড়ার সুমনকাঠি গ্রামে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর থানার ওসি আলী ইফতেখার হাসান বলেন, ঘটনাস্থল তাঁর থানা এলাকায় নয়, এটি হাজারীবাগ থানার অধীন। পরে যোগাযোগ করা হলে হাজারীবাগ থানার ওসি বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।