[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

রিজার্ভ চুরির চেয়েও বড় কেলেঙ্কারি করেছে বেক্সিমকো গ্রুপ: শ্রম উপদেষ্টা

প্রকাশঃ
অ+ অ-

নিজস্ব প্রতিবেদক

শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন | গ্রাফিক: পদ্মা ট্রিবিউন

শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির চেয়েও বড় কেলেঙ্কারি করেছে বেক্সিমকো গ্রুপ। টেক্সটাইল ও অ্যাপারেলস (বস্ত্র ও পোশাক) সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর মাধ্যমেই গ্রুপটি ঋণ নিয়েছে ২৮ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা। বেক্সিমকো শিল্পপার্কের আওতাধীন যে ৩২ কোম্পানির কথা বলা হয়, এর মধ্যে ১৬টিই অস্তিত্বহীন। এসব অস্তিত্বহীন কোম্পানির বিপরীতে আছে ১২ হাজার কোটি টাকার ঋণ।

সচিবালয়ে আজ মঙ্গলবার নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে অবস্থিত কোম্পানিগুলো নিয়ে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে শ্রম উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন এ কথাগুলো বলেন। বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, শিল্প ও পূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, অর্থসচিব মো. খায়েরুজ্জামান খান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেকসহ বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক ফেডারেশ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলারের রিজার্ভ চুরি হয়েছিল। বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী তা ৯৭২ কোটি টাকার সমান।

বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে শ্রম উপদেষ্টা বলেন, তিনটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। লে–অফ করা ১৩টি কোম্পানি বন্ধ করে দেওয়া, বেক্সিমকোর রিসিভারকে বরখাস্ত করা এবং ঋণদাতা ব্যাংকগুলোর কাছে বন্ধক থাকা শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বেক্সিমকো ফার্মা ও শাইনপুকুর সিরামিকসের শেয়ার বিক্রি করে লে–অফ কোম্পানির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের ব্যবস্থা করা।

বেক্সিমকোর কর্মীদের বেতন ও অন্য পাওনা বাবদ ৫০০ থেকে ৬০০ কোটি টাকা লাগতে পারে বলে ধারণা দেন শ্রম উপদেষ্টা। তিনি জানান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও বিএসইসি মিলে শেয়ার বিক্রির উদ্যোগ নেবে।

বেক্সিমকোর টেক্সটাইল ও অ্যাপারেলস খাতের ১৬ কোম্পানি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে কীভাবে ২৮ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে, তা তদন্ত করে এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবেও বলে জানান শ্রম উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ তদন্ত করা হবে। বের করা হবে কারা কারা এর সঙ্গে জড়িত। তাঁদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

বেক্সিমকোর কাছে জনতা ব্যাংক ২৩ হাজার ২৮৫ কোটি, সোনালী ব্যাংক ১ হাজার ৪২৪ কোটি, অগ্রণী ব্যাংক ৪২০ কোটি, রূপালী ব্যাংক ৯৮৭ কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংক ৩১৫ কোটি, ইউসিবি ৩৩৩ কোটি, এবি ব্যাংক ৯৩৮ কোটি, এক্সিম ব্যাংক ৪৯৭ কোটি, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ৬১ কোটি, ডাচ্–বাংলা ব্যাংক ৯৪ কোটি, আইএফআইসি ব্যাংক ৭৮ কোটি ও বিআইএফএফএল ৮৭ কোটি টাকা পাবে। শ্রম উপদেষ্টা এসব প্রতিষ্ঠানের নাম ধরে ধরে ঋণের তথ্য দেন।

বেক্সিমকোর নেওয়া ব্যাংকের ঋণগুলো খেলাপি কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে শ্রম উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা ব্যাংকগুলোর কাছে জিজ্ঞাসা করব। একটা খতিয়ান তৈরি বা তদন্ত করা হবে। বিশেষ করে টাকাগুলো কীভাবে নেওয়া হয়েছে। আমরা চর্মচক্ষুতে দেখতে পেয়েছি, রিজার্ভ চুরির থেকেও বড় কেলেঙ্কারি এটা। এই টাকা আমাদের টাকা, আপনাদের টাকা। সেখান থেকে টাকা উজাড় হয়েছে।’

বেক্সিমকো শিল্পপার্কে অবস্থিত কারখানাগুলোকে নিয়ে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদ আর কোনো বৈঠক করবে না বলে জানিয়ে দেন শ্রম উপদেষ্টা। তিনি বলেন, বেক্সিমকো লিমিটেডে নিয়োগ করা রিসিভারকে (বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক রুহুল আমিন) বরখাস্ত করা হবে। তাঁর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ, তিনি উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেননি; বরং উল্টো কাজ করেছেন।

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন