[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

ঈশ্বরদীতে রেলের জমি দখল করে যুবলীগ নেতার পিকনিক স্পট

প্রকাশঃ
অ+ অ-

হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকায় রেলের জায়গা দখল করে পিকনিক স্পট নির্মাণ করেছেন পাকশী ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক নেতা মোক্তার হোসেন। সম্প্রতি পাবনার ঈশ্বরদীতে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি ঈশ্বরদী: পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকায় রেলওয়ের জমি দখল করে পিকনিক স্পট তৈরি করছেন ইউনিয়ন যুবলীগের এক নেতা। প্রথমে ছোট একটি কফিশপ বানিয়ে তিনি জমিটি দখলে নেন। পরে পাকা স্থাপনা বানানোর মধ্য দিয়ে পিকনিক স্পট তৈরির কাজ শুরু করেছেন।

অভিযুক্ত ওই যুবলীগ নেতার নাম মোক্তার হোসেন। তিনি উপজেলার পাকশী ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সহসভাপতি। যদিও তিনি নিজেকে রেলওয়ের ঠিকাদার ও পাকশী ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি হিসেবে পরিচয় দেন।

সম্প্রতি সরেজমিন দেখা গেছে, এক পাশে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, অন্য পাশে লালন শাহ সেতু। মাঝখানে কিছু ফাঁকা জায়গা। লালন শাহ সেতুতে উঠতেই ডানে সড়ক ও জনপথ বিভাগের পরিদর্শন বাংলো। বাংলোর হার্ডিঞ্জ ব্রিজমুখী ফটকের সামনে একটি কফিশপ। ওই কফিশপ ঘিরে তৈরি হচ্ছে পিকনিক স্পট। চলছে বসার বেঞ্চ, টেবিল ও ঘর তৈরির কাজ। নাম দেওয়া হয়েছে ‘হার্ডিঞ্জ সেতু পিকনিক স্পট অ্যান্ড লালন শাহ কফিশপ’। 

ইট দিয়ে চারপাশে সীমানাপ্রাচীর তৈরিসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পিকনিক স্পট তৈরির কাজ চলা জমিটি পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের। দুই বছর আগে যুবলীগ নেতা মোক্তার হোসেন জমিটির এক কোনায় একটি টংদোকান বানিয়ে দখল শুরু করেন। দিনে দিনে দোকানটির পরিধি বাড়তে থাকে। টংদোকান থেকে তৈরি হয় বিশাল কফিশপ। এরপর পরিধি বাড়িয়ে বানানো হচ্ছে পিকনিক স্পট। ইট দিয়ে চারপাশে সীমানাপ্রাচীর তৈরিসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে।

এলাকাবাসীর দাবি, যুবলীগ নেতা মোক্তার হোসেন স্থানীয়ভাবে বেশ প্রভাবশালী। তিনি নিজেকে রেলওয়ের ঠিকাদার দাবি করেন। প্রভাব খাঁটিয়ে রেলওয়ের জমিটি দখলে নিয়েছেন। কিন্তু রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখেও দেখছে না। অন্যদিকে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকার নিরাপত্তায় নির্মাণাধীন পিকনিক স্পটের মাত্র ১০০ গজ দূরে একটি পুলিশ ফাঁড়ি আছে। দখলের বিষয়টি দেখে পুলিশও কিছু বলেনি। 

সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছেন যুবলীগ নেতা মোক্তার হোসেন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

যুবলীগ নেতা মোক্তার হোসেন  বলেন, প্রতিদিন শত শত মানুষ হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, লালন শাহ সেতু ও রূপপুরে নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প দেখতে আসেন। কিন্তু সেখানে তাঁদের বসার কোনো ব্যবস্থা নেই। টয়লেটেরও ব্যবস্থা নেই। অনেকে হাতমুখ ধুতে চেয়েও পারেন না। তাই পর্যটকদের কথা ভেবে তিনি জনস্বার্থে পিকনিক স্পটটি তৈরি করছেন। রেলওয়ের জমি ব্যবহারের অনুমতি নিয়েছেন কি না, জানতে চাইলে মোক্তার বলেন, এখনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। তবে শিগগিরই আবেদন করা হবে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগের ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান বলেন, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকায় কোনো পাকা স্থাপনা নির্মাণের প্রশ্নই আসে না। সেখানে কোনো পিকনিক স্পট তৈরির অনুমতিও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি তাঁদের জানা ছিল না। দ্রুত খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অরবিন্দ সরকার বলেন, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ অবকাঠামোর নিরাপত্তার বিষয়টি পাকশী ফাঁড়ির সদস্যরা দেখভাল করেন। বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব রেলওয়ের। এরপরও খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।

পাকশী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, মোক্তার হোসেন ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি নন, সহসভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। বর্তমানে দলের কোনো পদে তিনি নেই। দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে তিনি অবৈধ কিছু করলে সেই দায়িত্ব তাঁর নিজের, যুবলীগের নয়।

জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ফাহিমুল কবির বলেন, এ দখলের সঙ্গে রাজনৈতিক প্রভাবের কোনো যোগসূত্র নেই। তবে তিনি অবৈধ কিছু করে থাকলে অবশ্যই তার ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন