[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

বিএফইউজে–ডিইউজের বিবৃতি: নির্বাচন সামনে রেখে সংবাদমাধ্যমের ওপর আরেকটি খড়্গ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো

প্রকাশঃ
অ+ অ-

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ | ছবি: সংগৃহীত

বিশেষ প্রতিনিধি: সরকারি ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো হিসেবে ঘোষণা করে সম্প্রতি জারি করা প্রজ্ঞাপন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। তারা এই প্রজ্ঞাপনকে সরকারের দুরভিসন্ধি ও গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের নতুন হাতিয়ার হিসেবে বর্ণনা করেছে। একই সঙ্গে তারা বলেছে, এটি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সংবাদমাধ্যমের ওপর আরেকটি খড়্গ। তারা এই প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানিয়েছে।

সোমবার বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহ ও মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন এবং ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।

বিবৃতিতে সাংবাদিক নেতারা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ১৫ ধারার দোহাই দিয়ে জারি করা তথ্য পরিকাঠামো প্রজ্ঞাপন প্রতারণামূলক। সাংবাদিক সমাজ এই প্রজ্ঞাপন প্রত্যাখ্যান করছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারি ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো ঘোষণা করে যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে, তা স্বাধীন সাংবাদিকতার পথ রুদ্ধ করবে। এই প্রজ্ঞাপন তথ্য অধিকার আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সাংবাদিকদের মধ্যে যে ভীতি-আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, তাকে চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার জন্যই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সাংবাদিক নেতারা বলেন, এই অপতৎপরতার নেপথ্যে যে সরকারের অসদুদ্দেশ্য ও দুরভিসন্ধি রয়েছে, ঠান্ডা মাথায় তালিকা যাচাই করলেই তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তালিকায় রাষ্ট্রের স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান জাতীয় সংসদ, বিচার বিভাগ, অডিট (নিরীক্ষা) বিভাগ, প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাম নেই। আগামী বছর জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২৯ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছাড়াও নির্বাচনসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে। যেগুলো নির্বাচনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত রয়েছে। সাংবাদিকেরা যেন এ-সংক্রান্ত কোনো সংবাদ সংগ্রহ বা প্রকাশ করতে না পারেন, সে জন্যই এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে সংবাদমাধ্যমের ওপর এটি আরেকটি খড়্গ।

বিবৃতিতে অবাধ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিতে অনতিবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সব কালাকানুন বাতিল, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সাংবাদিকদের অর্থদণ্ডের বিধান রেখে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল আইনের সংশোধনীর উদ্যোগ বন্ধের দাবি জানানো হয়।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮-এর ধারা ১৫ অনুযায়ী সরকারি ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো হিসেবে ঘোষণা করে গত ২১ সেপ্টেম্বর এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ। আইসিটি বিভাগ তাদের ওয়েবসাইটে ২৬ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপনটি প্রকাশ করে।

তথ্য পরিকাঠামো হলো কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার কম্পিউটার সিস্টেম বা নেটওয়ার্ক, যেখানে তথ্য সংরক্ষণ করা হয়। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে বেআইনিভাবে প্রবেশ করলে সাত বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড দেওয়া যাবে। বেআইনিভাবে প্রবেশ করে ক্ষতিসাধন বা ক্ষতির চেষ্টা করলে ১৪ বছর কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডই দেওয়া যাবে।

আইসিটি বিভাগ বলছে, এই তথ্য পরিকাঠামোয় জনগণের তথ্যপ্রাপ্তিতে ব্যাঘাত ঘটবে না। তবে এই প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন প্রতিবাদ জানিয়েছে। তালিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ, বিভ্রান্তিকর ও অবিবেচনাপ্রসূত বলে আখ্যা দিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এর মাধ্যমে আইনের অপপ্রয়োগের আশঙ্কা করেছে সংস্থাটি।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন