[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

বিএনপির প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ১১ নেতার পদত্যাগ

প্রকাশঃ
অ+ অ-
উপরে (বাঁ থেকে) পদত্যাগ করা বিএনপি নেতা শাজাহান সাজু, আব্দুল বাসেদ, আব্দুল মান্নান; নিচে (বাঁ থেকে) আব্দুর রউফ, আব্দুল লতিফ মিয়া ও আশরাফুল আলম | ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আহমেদ আযম খানের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের অভিযোগ তুলে দলের ১১ জন নেতা পদত্যাগ করেছেন। গতকাল সোমবার গভীর রাতে পাঁচজন এবং আজ মঙ্গলবার বেলা দুইটার মধ্যে আরও ছয়জন তাঁদের পদত্যাগপত্র ফেসবুকে প্রকাশ করেন।

একই অভিযোগে সখীপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের আরও দুই শতাধিক পদধারী নেতা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সম্প্রতি অব্যাহতি পাওয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান সাজু।

গত রাতে একযোগে পদত্যাগ করা পাঁচ নেতা হলেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল বাসেদ, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আবদুল মান্নান, বিএনপির সদস্য আশরাফুল আলম, গজারিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদুর রউফ এবং বহুরিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক লতিফ মিয়া।

আজ বেলা দুইটা পর্যন্ত পদত্যাগকারী ছয়জন হলেন সম্প্রতি অব্যাহতি পাওয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান সাজু, গজারিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সদস্যসচিব মো. মজিবর ফকির, গজারিয়া ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক মো. রবিউল আউয়াল, সদস্যসচিব মো. বিপ্লব, একই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ এবং দাড়িয়াপুর ইউনিয়ন যুবদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজিদুর রহমান।

আহমেদ আযম খান বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান এবং টাঙ্গাইল-৮ আসনে এবার বিএনপি মনোনীত প্রার্থী। তিনি এর আগে ২০০১ ও ২০০৮ সালে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হয়েছেন।

বিএনপির নেতারা অভিযোগ করেছেন, আহমেদ আযম খান নির্বাচনে ভোট টানতে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কয়েক দফা গোপন বৈঠক করেছেন। দলীয় বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণা সভা ও সমাবেশে তারা সামনের সারিতে বসছেন এবং কেউ কেউ বক্তব্যও দিচ্ছেন। অধিকাংশ নেতার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ছাত্রদের ওপর হামলার অভিযোগে মামলা রয়েছে। পদত্যাগ করা ১১ জন নেতার পদত্যাগপত্রও একই ধরনের, ভাষা এক ও অভিন্ন।

পদত্যাগ প্রসঙ্গে সখীপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল বাসেদ বলেন, ‘কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করছি, আযম খান আমাদের দলীয় নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন না করে ভোট পাওয়ার আশায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের গুরুত্ব বেশি দিচ্ছেন। তাঁদের সামনের সারিতে চেয়ার দিচ্ছেন। প্রতিবাদ করলে আমাদের বহিষ্কারের হুমকি দিচ্ছেন।’

সম্প্রতি দল থেকে অব্যাহতি পাওয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাজাহান সাজু বলেন, ‘আহমেদ আযম খান গত বুধবার টাঙ্গাইল জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক খালেক মণ্ডলকে হুমকি ও গালাগাল করেছেন। গত রোববার রাতে মুক্তিযুদ্ধের ৫৪ বছর পর হঠাৎ নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রচার করেছেন। আমি গত ১৭ বছর দলের জন্য জেলজুলুম ভোগ করেছি, আওয়ামী লীগের নির্যাতন সহ্য করেছি। এখন তিনি সেই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের পুনর্বাসন করছেন এবং তাঁদের সামনের সারিতে জায়গা দিচ্ছেন। নেতার এসব কর্মকাণ্ডে আমরা অপমানিত বোধ করছি। আমরা আহমেদ আযম খানের দলীয় মনোনয়ন বাতিলের দাবি করছি। তা না হলে আজকালের মধ্যে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের আরও দুই শতাধিক পদধারী নেতা সংবাদ সম্মেলন করে পদত্যাগ করবেন। ইতিমধ্যে তাঁরা আমার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।’

উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘দলকে বিতর্কিত করতে আমাদের দলের ভেতর একটি পক্ষ গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আহমেদ আযম খানকে বিতর্কিত করার জন্য একজন শিল্পপতি ইতিমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে দান-অনুদানের নামে টাকা ছড়াচ্ছেন। আর যারা পদত্যাগ করেছেন, তাঁদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ছিল। বিষয়টি টের পেয়ে তাঁরা বহিষ্কৃত হওয়ার আগেই পদত্যাগ করেছেন।’

টাঙ্গাইল-৮ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আহমেদ আযম খান বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে, বিএনপির বিরুদ্ধে, ধানের শীষের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। জনগণ এবার ঐক্যবদ্ধ আছে, কোনো ষড়যন্ত্রই ধানের শীষের বিজয়কে বাধা দিতে পারবে না।’

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন