[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

কারও দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়ন করা অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ নয়: তারেক রহমান

প্রকাশঃ
অ+ অ-
‘হিন্দু প্রতিনিধি সম্মেলন-২০২৫’–এ প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তিনি | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

জনগণের ভোটে গঠিত, জনগণের কাছে দায়বদ্ধ ও জবাবদিহিমূলক একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘এই সরকারের কাজ কোনোভাবেই কারও দলীয় স্বার্থ পূরণ করা নয়।’

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘হিন্দু প্রতিনিধি সম্মেলন–২০২৫’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তারেক রহমান। মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোটের উদ্যোগে আয়োজিত এই সম্মেলনে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠন ও মঠ-মন্দির পরিচালনা কমিটির নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। বেদ ও গীতা পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়, এরপর অতিথিরা প্রদীপ প্রজ্বালন করেন।

দেশে অস্থিরতা দেখা দিলে পরাজিত ও পলাতক ফ্যাসিবাদী অপশক্তির পুনরায় মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার সুযোগ তৈরি হতে পারে বলে সতর্ক করেন তারেক রহমান। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘গুপ্ত রাজনীতি’ সম্পর্কে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।

তারেক রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসনামলে ফ্যাসিবাদের দমন থেকে বাঁচতে অনেক ফ্যাসিবাদবিরোধী ব্যক্তি ‘গুপ্ত কৌশল’ অবলম্বন করেছিলেন। এখন পতিত ও পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তিও একইভাবে ‘গুপ্ত কৌশল’ ব্যবহার করে দেশের গণতন্ত্রের পথে বাধা সৃষ্টি করছে কি না, সে বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানাচ্ছেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে রাজপথের কিছু সঙ্গীর ভূমিকা এমন এক পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা দেশে ‘আপনার, আমার, আমাদের’ অনেকের অধিকার ও সুযোগকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

পতিত ও পলাতক অপশক্তিকে কোনো সুযোগ না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘গুপ্ত বাহিনীর অপকৌশল থেকে বাঁচার অন্যতম উপায় হলো ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রাখা।’ তিনি যোগ করেন, বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকার ও ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সহযোগী দলগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা ও সমঝোতার মনোভাব বজায় রেখেছে।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি সব সময়ই ‘একটি শান্তিপ্রিয়, সহনশীল ও জনগণের দল’—এমনটাই উল্লেখ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ভিন্ন দল ও মতের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব রাখা বিএনপির রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ। দেশের জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করাই বিএনপির রাজনীতির মূল লক্ষ্য বলেও দাবি করেন তিনি।

তিনি জানান, নির্বাচনে জয়ী হয়ে বিএনপি সরকার গঠন করলে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য ৫০ লাখ ‘ফ্যামিলি কার্ড’ দেওয়া হবে এবং তরুণদের চাকরির সুযোগ তৈরি করা হবে। তারেক রহমান বলেন, ‘তরুণদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে আমরা কারিগরি প্রশিক্ষণ ও গুরুত্বপূর্ণ ভাষা শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছি, যাতে তারা দক্ষ হয়ে দেশে-বিদেশে কাজের সুযোগ পায়।’

বাংলাদেশের ধর্মীয় বিশ্বাস ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের কথা উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘বৈচিত্র্যের মধ্যেই ঐক্যের বন্ধনই আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজের সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সৌন্দর্য।’ তিনি বলেন, এই বৈচিত্র্যময় সমাজে ঐক্যের সূত্র হলো বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ।

সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকারের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে এই দেশে আপনার যতটুকু অধিকার, আমারও ঠিক ততটুকুই অধিকার—কারও বেশি নয়, কারও কম নয়।’ এ সময় তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের উত্থাপিত বিভিন্ন দাবির বিষয়ে আশ্বাস দেন।

মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোটের আহ্বায়ক সোমনাথ সেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে হিন্দু সম্প্রদায়ের দাবিগুলো বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে তুলে ধরেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোটের সদস্যসচিব ও মুখপাত্র কপিল কৃষ্ণ মণ্ডল, যুগ্ম আহ্বায়ক সমেন সাহা, হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, হিন্দু ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার এবং মতুয়া সম্প্রদায়ের নেতা সুবর্ণা রানী ঠাকুর। 

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন