চাকসু নির্বাচনে শিক্ষার্থীকে ১০ মিনিটে ৪০ ভোট দিতে হবে
নির্বাচন পরিচালনা কমিটি আরও জানিয়েছে, একজন শিক্ষার্থীকে পাঁচটি ব্যালট দেওয়া হবে। এর মধ্যে চারটিতে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের প্রার্থীর নাম ও ব্যালট নম্বর থাকবে, আর একটিতে হল সংসদের প্রার্থীর নাম ও ব্যালট নম্বর থাকবে। এতে ভোটাররা সহজে বুঝতে পারবেন কোন ব্যালটে কোন পদ রয়েছে। ভোট গণনা হবে অপটিক্যাল মার্ক রিডার (ওএমআর) পদ্ধতিতে।
প্রকৌশল অনুষদে ভোট দেবেন ৪ হাজার ৩৬ শিক্ষার্থী। তাঁরা সোহরাওয়ার্দী হলে থাকেন। কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের নতুন ভবন শহীদ হৃদয় চন্দ্র তরুয়া ভবনে ভোট দেবেন ৫ হাজার ২৬৩ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে শাহজালাল হলে ২ হাজার ৬৬৬ জন, এ এফ রহমান হলে ১ হাজার ৩০৭ জন এবং আলাওল হলে ১ হাজার ২৯০ জন ভোটার রয়েছেন।
বিজ্ঞান অনুষদ ভবনে ভোট দেবেন ৪ হাজার ৫৩৮ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে শাহ আমানত হলে ২ হাজার ২৪৭ জন, শহীদ আবদুর রব হলে ১ হাজার ৭৭৫ জন এবং মাস্টারদা সূর্য সেন হলে ৫১৬ জন ভোটার রয়েছেন।
সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভবনে ভোট দেবেন ৬ হাজার ৬০৬ শিক্ষার্থী। নবাব ফয়জুন্নেছা হলে ১ হাজার ১৭৯ জন, শামসুন নাহার হলে ২ হাজার ২৯১ জন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হলে ২ হাজার ৪৮৭ জন এবং অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান হলে ৬৪৯ জন ভোটার রয়েছেন।
ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ভবনে ভোট দেবেন ৭ হাজার ৭৩ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে প্রীতিলতা হলে ২ হাজার ৫৫৫ জন, বিজয়–২৪ হলে ২ হাজার ৬০৪ জন, শহীদ ফরহাদ হোসেন হলে ১ হাজার ৭৬০ জন এবং শিল্পী রশিদ চৌধুরী হোস্টেলে ১৫৪ জন ভোটার রয়েছেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন বলেন, 'আমরা প্রতিটি বুথে সর্বোচ্চ ৫০০ শিক্ষার্থীর ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। প্রত্যেক শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের জন্য ২৬টি ও হল সংসদের জন্য ১৪টি, মোট ৪০টি পদে ভোট দিতে পারবেন। আমরা যাচাই করেছি এবং প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য ১০ মিনিট সময় বরাদ্দ করেছি। তবে দুই থেকে তিন মিনিট বেশি সময় লাগলেও কোনো সমস্যা হবে না।'
নির্বাচনের বাকি সময় মাত্র দুই দিন। প্রচারণার সময়ও মাত্র ৩৬ ঘণ্টা। শেষ মুহূর্তে তাই প্রার্থীরা প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। আজ রোববার দুপুর ১২টায় দেখা গেছে, রেলস্টেশন থেকে ঝুপড়ি—সবখানেই প্রার্থীরা প্রচারপত্র বিতরণ করছেন এবং ভোটারদের সমর্থন চাইছেন।
বৈচিত্র্যের ঐক্য প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী ধ্রুব বড়ুয়াকে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ঝুপড়িতে দেখা গেছে। তিনি শিক্ষার্থীদের নানা প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন। এক ফাঁকে বলেন, 'আমরা সব শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি। নিজেদের প্রতিশ্রুতিও তুলে ধরছি।' শিক্ষার্থীরাও আগ্রহ দেখিয়ে প্রশ্ন করছেন। পুরো পরিবেশটি উৎসবমুখর।
নাট্যকলা বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী বিশ্বনাথ ভৌমিক বলেন, 'পরিবেশ এখন পর্যন্ত উৎসবমুখর। দীর্ঘদিন পর নির্বাচন হচ্ছে, তাই শিক্ষার্থীরাও উচ্ছ্বসিত।'
কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে ছাত্রীকল্যাণ সম্পাদক পদে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী উম্মুল আখয়ার। সার্বভৌম শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেল থেকে তিনি নির্বাচন করছেন। তাঁর ভাষ্য, 'নিজস্বতা বজায় রেখে প্রচারণা চালাচ্ছি। ভোটারদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি।'
একই প্যানেলের ভিপি প্রার্থী তাওসিফ মুত্তাকী চৌধুরী বিজ্ঞান অনুষদের নিচে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, 'আমরা একটি আধুনিক ক্যাম্পাস গড়তে চাই। এ প্রতিশ্রুতি সবাইকে দিচ্ছি।'
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশেষ চাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালে। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আবার ভোট হতে যাচ্ছে। এবার মোট ভোটার প্রায় ২৭ হাজার, যার মধ্যে ছাত্রী প্রায় সাড়ে ১১ হাজার। ভোটের দিন ৪০টি ব্যালট হাতে নিয়ে শিক্ষার্থীদের ‘সময়ের সঙ্গে দৌড়’ দেখার অপেক্ষা।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন