রাকসু নির্বাচনে বামপন্থী প্যানেলের ইশতেহার প্রকাশ
![]() |
ইশতেহার ঘোষণা করছে বামপন্থী ছাত্রসংগঠন–সমর্থিত প্যানেল গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেট এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনকে সামনে রেখে বামপন্থী ছাত্রসংগঠন সমর্থিত ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’ প্যানেল ১৬ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে এক সংবাদ সম্মেলনে ইশতেহার প্রকাশ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ইশতেহার ঘোষণা করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সাবেক শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক জাহিদ হাসান। উপস্থিত ছিলেন প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ফুয়াদ রাতুল, জিএস প্রার্থী কাউছার আহম্মেদ ও এজিএস প্রার্থী নাসিম সরকার।
ইশতেহারে রাকসুর কাঠামো সংস্কার ও ক্ষমতা বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে একাডেমিক ক্যালেন্ডারে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারণ, সিনেটে ৫ জনের পরিবর্তে ন্যূনতম ১০ জন নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধি রাখা, শিক্ষার্থীদের গণভোট ছাড়া হল সংসদ ও কেন্দ্রীয় সংসদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অপসারণের ক্ষমতা প্রশাসনের হাতে না রাখা এবং অনুষদভিত্তিক শিক্ষার্থী প্রতিনিধি নির্বাচন।
শিক্ষার্থীদের ক্ষমতায়ন ও শিক্ষার মানোন্নয়নের বিষয়েও ইশতেহারে পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে। এতে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ ও বেসরকারীকরণের বিরুদ্ধে আন্দোলন, ইউজিসির কৌশলপত্র বাতিল, সান্ধ্য কোর্স বন্ধ, সব ধরনের ফি বৃদ্ধি বন্ধ, তিন মাসের মধ্যে ফল প্রকাশ বাধ্যতামূলক করা, শিক্ষক মূল্যায়ন বিষয়ে শিক্ষার্থীদের জানানো এবং মূল্যায়নের ভিত্তিতে বিভাগীয় পদক্ষেপ নেওয়া অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া উপস্থিতির হারের ওপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটের অন্তত ১০ শতাংশ গবেষণায় বরাদ্দ রাখার দাবি করা হয়েছে।
আবাসন ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ইশতেহারে বলা হয়েছে, হলে সন্ত্রাস ও দখলদারত্ব বন্ধ করা, আবাসন সংকট নিরসন, পুরোনো ভবন সংস্কার ও নতুন ভবন নির্মাণে প্রশাসনকে বাধ্য করা। এছাড়া শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে বাধ্য না করা, গণরুম ও র্যাগিং বন্ধ করে ক্যাম্পাস চার্টার প্রকাশের কথাও উল্লেখ রয়েছে।
ইশতেহারে বলা হয়েছে, লাইব্রেরি সপ্তাহে সাত দিন ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা হবে। নতুন বই ও ই-বুক সংযোজন করা হবে এবং আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা হবে। হলগুলোতে ক্যানটিনের পাশাপাশি প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ডাইনিং চালু থাকবে; খাবারে ভর্তুকি দিয়ে দাম কমানো, মান বাড়ানো এবং তিন মাস পরপর খাবার ও পানীয়ের মান পরীক্ষা করা হবে। এছাড়া প্রতি বেলায় খাবারে কমপক্ষে ৮০০ কিলো ক্যালরি খাদ্যশক্তি নিশ্চিত করা হবে।
নারীবান্ধব ক্যাম্পাস গড়ার অঙ্গীকারে বলা হয়েছে, নারী শিক্ষার্থীদের সাইবার সুরক্ষা, চলাফেরার স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের অধিকার নিশ্চিত করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল কার্যকর করা হবে। অন্তঃসত্ত্বা শিক্ষার্থীদের জন্য ইনটেনসিভ কেয়ার সেন্টার ও ব্রেস্টফিডিং কর্নার স্থাপনসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে। নারীরা রাতে হলে যাতায়াত করতে যাতে কোনো প্রশাসনিক জটিলতার মুখোমুখি না হন, তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন