ম্যানুয়াল ভোট গণনা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসে ব্যালট ছাপানোর দাবি
![]() |
‘বৈচিত্র্যের ঐক্য’ প্যানেলের সংবাদ সম্মেলন। আজ বেলা দুইটায় চাকসু ভবনের সামনে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদের নির্বাচনে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোট গণনার দাবি জানিয়েছে ‘বৈচিত্র্যের ঐক্য’ প্যানেল। এ বিষয়ে আজ সোমবার দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিনের কাছে একটি স্মারকলিপি দেন প্যানেলের প্রার্থীরা।
স্মারকলিপিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ব্যালট পেপার ছাপানোর দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি বলা হয়, প্রতিটি ভোটকক্ষের জন্য প্রতি প্যানেল থেকে অন্তত একজন করে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্যও পোলিং এজেন্ট রাখার সুযোগ দিতে হবে।
ভোট ও গণনা প্রক্রিয়া সুষ্ঠু রাখতে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো এবং সাংবাদিকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়। প্রতিটি ব্যালটে সিরিয়াল নম্বর ও স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহারের দাবিও জানানো হয়।
এ ছাড়া ভোটারদের তালিকা প্রকাশ, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোটের ব্যবস্থা, নারী প্রার্থী ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, এবং নির্বাচনের দিন শহর থেকে ক্যাম্পাসে ও ক্যাম্পাস থেকে শহরে যাতায়াতের জন্য পর্যাপ্ত বাস ও ট্রেনের ব্যবস্থার দাবি জানায় প্যানেলটি।
স্মারকলিপি দেওয়ার পর বেলা দুইটায় চাকসু ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করেন ‘বৈচিত্র্যের ঐক্য’ প্যানেলের প্রার্থীরা। এতে উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী ধ্রুব বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী সুদর্শন চাকমা, সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদপ্রার্থী জাকিরুল ইসলাম, যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক প্রার্থী মোশরেফুল হক এবং পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক প্রার্থী মোহাম্মদ আকিব।
লিখিত বক্তব্যে সুদর্শন চাকমা বলেন, '৩৫ বছর পর চাকসু নির্বাচন হচ্ছে। সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে, শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে না হলে এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রশাসনের কাছে স্পষ্ট ও শক্ত ভূমিকার দাবি করছি, যাতে চাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়।'
এজিএস পদপ্রার্থী জাকিরুল ইসলাম বলেন, 'সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। ১০টি রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত আমাদের প্যানেল আশা করছে, প্রশাসন আমাদের প্রস্তাব বিবেচনা করে নির্বাচনের রোডম্যাপ শিগগিরই প্রকাশ করবে।'
এক প্রশ্নের জবাবে ধ্রুব বড়ুয়া বলেন, 'প্রশাসন জানিয়েছে, আমাদের সব দাবি সঠিক, তবে সবকিছু বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, স্বচ্ছতার জন্য অন্তত জানানো হোক, কার কাছ থেকে ওএমআর নেওয়া হচ্ছে। এতে দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হবে।'
গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ক্যাম্পাসের কলার ঝুপড়িতে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বৈচিত্র্যের ঐক্য’ প্যানেল ঘোষণা করা হয়। প্যানেল ঘোষণা করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি ও ইতিহাস বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী রোনাল চাকমা। তখন জানানো হয়, প্যানেলে সাতটি রাজনৈতিক সংগঠনের ১১ পাহাড়ি শিক্ষার্থী ও পাঁচ নারী শিক্ষার্থী রয়েছেন।
১৫ অক্টোবর তিন দশক পর সপ্তম চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। একই দিনে হল সংসদ নির্বাচনও হবে। নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ২৭ হাজার, যার মধ্যে ছাত্র ১৬ হাজার ৮৪ জন এবং ছাত্রী ১১ হাজার ৩২৯ জন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী চাকসু ও হল সংসদে চূড়ান্ত প্রার্থী আছেন ৯০৭ জন। এর মধ্যে চাকসুর ২৬টি পদের বিপরীতে ৪১৫ জন এবং হল সংসদ নির্বাচনে ৪৮৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন