চাকসুর ভিপি–জিএস পদে ৪৭ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা
![]() |
চাকসু নির্বাচনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছেন দুই শিক্ষার্থী | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলস্টেশন থেকে শুরু করে শহীদ মিনার, কলা অনুষদের ঝুপড়ি কিংবা গোলচত্বর—সবখানেই এখন চাকসু নির্বাচন নিয়ে আলোচনা। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর সপ্তমবারের মতো হতে যাচ্ছে এ নির্বাচন। তাই কেন্দ্রীয় সংসদের ২৬টি পদের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৪২৯ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে শীর্ষ পদে লড়তে প্রার্থীদের ভিড় দেখা গেছে।
চাকসুর কোন পদে কতজন শিক্ষার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, সেই তথ্য আজ শুক্রবার রাত ৯টার দিকে প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। তারা জানিয়েছে, সহসভাপতি (ভিপি) পদে মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে ২৫টি। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে প্রার্থী হয়েছেন সমানসংখ্যক ২২ জন করে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, শীর্ষ এই তিন পদে যে ভিড় তৈরি হয়েছে, তা আসলে ছাত্ররাজনীতির নেতৃত্ব কাঠামোয় নতুন প্রজন্মের জায়গা করে নেওয়ার লড়াই। দীর্ঘদিন নির্বাচন না হওয়ায় নেতৃত্ব গড়ে ওঠেনি, ফলে একসঙ্গে অনেক শিক্ষার্থী এখন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন।
নির্বাচন কমিশনার এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী জানান, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে আগামীকাল শনিবার, প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ হবে আগামী রোববার। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় আগামী মঙ্গলবার। প্রার্থীর ব্যাপারে আপত্তি জানানোর শেষ সময় আগামী বুধবার এবং চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবে বৃহস্পতিবার। আগামী ১২ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
কোন পদে কত মনোনয়ন
কেন্দ্রীয় সংসদের সম্পাদকীয় পদগুলোতেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা তীব্র। খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে প্রার্থী ১২ জন ও সহ–খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদকে ১৫ জন; সাহিত্য-সংস্কৃতি সম্পাদকে ১৮ জন ও সহ-সাহিত্য-সংস্কৃতি সম্পাদকে ১৬ জন; দপ্তর সম্পাদকে ১৮ ও সহদপ্তর সম্পাদকে ১৪ জন; বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদকে ১১ জন; গবেষণা ও উদ্ভাবনবিষয়ক সম্পাদকে ১৩ জন; সমাজসেবা ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদকে ২০ জন; স্বাস্থ্য সম্পাদকে ১৭ জন; মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদকে ১৭ জন; ক্যারিয়ার উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদকে ১৬ জন; যোগাযোগ ও আবাসনবিষয়ক সম্পাদকে ২০ ও সহযোগাযোগ ও আবাসনবিষয়ক সম্পাদকে ১৪ জন; আইন ও মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদকে ১১ জন; পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদকে ২১ জন এবং কার্যনির্বাহী সদস্য পদে ৮৪ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
নারী শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত দুটি পদ রয়েছে। ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক ও সহ-ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র পড়েছে সমানসংখ্যক ১২ জন করে।
নির্বাচন ঘিরে প্রত্যাশা
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৯ বছরের ইতিহাসে চাকসু নির্বাচন হয়েছে মাত্র ছয়বার। সপ্তমবারের মতো এ আয়োজন শিক্ষার্থীদের কাছে শুধু ভোট নয়, বরং গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণের বড় সুযোগ। নির্বাচনী উত্তাপ বাড়লেও শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা সাধারণ প্রত্যাশা-ভুলভ্রান্তিহীন, সুষ্ঠু নির্বাচন। সম্প্রতি কয়েকটি ঘটনায় প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও শিক্ষার্থীরা চান, চাকসু নির্বাচন ঘিরে যেন নতুন আস্থা তৈরি হয়।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আয়েশা আবেদিন বলেন, ‘আমরা চাই চাকসু নির্বাচন হোক শিক্ষার্থীদের উৎসব। কিন্তু যদি প্রশাসন পক্ষপাতিত্ব করে, তাহলে এ আস্থা ভেঙে যাবে।’
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন