চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষ: ছাত্রীকে মারধরের কথা বাদ দিয়ে কর্তৃপক্ষের মামলা
![]() |
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সংঘর্ষ। গত রোববার দুপুরে ক্যাম্পাসের ২ নম্বর গেটসংলগ্ন জোবরা গ্রামে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনায় ১ হাজার ৯৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে কর্তৃপক্ষ। এতে ৯৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাতপরিচয়ের আসামি করা হয় আরও এক হাজার জনকে।
এক ছাত্রীকে ভাড়া বাসার দারোয়ান মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয় বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করলেও মামলার এজাহারে তা উল্লেখ করা হয়নি।
আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (নিরাপত্তা) আবদুর রহিম বাদী হয়ে হাটহাজারী থানায় এই মামলা করেন। ছাত্রীকে মারধরের বিষয়টি এজাহারে উল্লেখ না করার ব্যাপারে জানতে চাইলে মামলার বাদী আবদুর রহিম বলেন, কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এজাহার লেখা হয়েছে।
হাটহাজারী থানার ওসি আবু মাহমুদ কাওসার হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। মামলায় উল্লেখ করা আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্থানীয় জোবরা গ্রামের বাসিন্দা যুবলীগ নেতা মো. হানিফ, মো. ইকবাল, মো. রেজাউল, মো. সরোয়ার, সোলাইমান, মহি উদ্দিন, খোরশেদ, জিসান ও আরমান।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর ভাড়া বাসায় গেট খোলাকে কেন্দ্র করে দারোয়ানের সঙ্গে উভয়ের ঝগড়া হয়। এই ঘটনার জেরে স্থানীয় জোবরা গ্রামবাসীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। গ্রামবাসীরা অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালায়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করে তিন লাখ টাকার ক্ষতি করে। বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির পিকআপ ভাঙচুর করে এক লাখ টাকার ক্ষতি করে। বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধানের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে ৩৫ হাজার টাকা ক্ষতি করে। এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও হামলা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৫০ জন শিক্ষার্থীকে আহত করা হয়।
গত শনিবার রাত সোয়া ১২টায় জোবরা গ্রামে ভাড়া বাসার দারোয়ান এক ছাত্রীকে মারধর করেছেন, এমন খবরে সংঘর্ষের শুরু হয়। সেদিন রাত সাড়ে তিনটা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলে। পরদিন রোববার দুপুরে আবার সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের কুপিয়ে, ইট ও লোহার রডের আঘাতে আহত করা হয়। আহত হন অন্তত ২০০ জন। এ ছাড়া গ্রামবাসী আহত হন ১০ থেকে ১৫ জন। ভাঙচুর হয় গ্রামের বিভিন্ন ঘরবাড়ি ও গাড়ি। এ ঘটনার পর দুই দিন ধরে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। ক্যাম্পাসে মোতায়েন রয়েছে সেনাবাহিনী।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন