নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
![]() |
বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদের পাশের আসনটি জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের জন্য রাখা হলেও তা খালি দেখা যায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে যোগ দেয়নি জামায়াতে ইসলামী। লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকের পর ঘোষিত যৌথ বিবৃতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করে দলটি মঙ্গলবারের সংলাপে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
সকালে বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে কমিশনের দ্বিতীয় দফার সংলাপ শুরু হয়। সেখানে দেশের ৩০টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়। তবে জামায়াতের কোনো প্রতিনিধিকে দেখা যায়নি।
বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধি সালাহউদ্দিন আহমদের পাশে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের জন্য আসন নির্ধারিত ছিল। কিন্তু তা খালি ছিল। জামায়াতের স্থলে ওই সারিতে বসেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির তাসনিম জারা, বিএনপির ইসমাইল জবিহউল্লাহ ও অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘আমরা আজকের বৈঠকে অংশ নেইনি— এটা আমাদের প্রতিবাদ।’
আগামীকালের সংলাপে অংশ নেবেন কি না— এমন প্রশ্নে তিনি জানান, এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
দলটির এক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘লন্ডনের যৌথ বিবৃতিটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় হয়নি। মাত্র একটি দলের কথায় জাতীয় নির্বাচনের তারিখ বদলে দেওয়া হলো— এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম, দেশে ফিরে প্রধান উপদেষ্টা বিষয়টি রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে তুলে ধরবেন। কিন্তু সেটা হয়নি।’
বিরতির সময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী প্রতীকী বয়কট করেছে।’
এর কারণ লন্ডনের বৈঠক কি না— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনারা বুঝে নিন।’
ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, ‘জামায়াত কেন আসেনি, সেটা তারাই বলতে পারবে।’
জাতীয় গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘একটি-দুটি দলকে প্রাধান্য দিয়ে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা দেওয়া ঠিক হয়নি।’
সংলাপে আরও অংশ নেন গণফ্রন্টের টিপু বিশ্বাস, খেলাফত মজলিসের আহমেদ আবদুল কাদের, গণসংহতি আন্দোলনের আবুল হাসান রুবেল, এবি পার্টির আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, জাসদের মুশতাক হোসেনসহ আরও অনেকে।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সহসভাপতি আলী রীয়াজ। উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, আইয়ুর মিয়া, ইফতেখারুজ্জামান ও সফর রাজ হোসেন।
ঐকমত্য কমিশন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সংলাপ চলবে। এতে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ, নারী প্রতিনিধিত্ব, প্রধান বিচারপতির নিয়োগসহ কয়েকটি বিষয়ে ঐক্যমত্যের চেষ্টা করা হবে।
গত ফেব্রুয়ারিতে ছয়টি সংস্কার কমিশনের জমা দেওয়া ১৬৬টি সুপারিশের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যাত্রা শুরু করে ১৫ ফেব্রুয়ারি।
৩৮টি দল ও জোটের মধ্যে ৩৩টি দল মতামত দেয়। মার্চ থেকে মে পর্যন্ত ৪৫টি অধিবেশনে আলোচনার প্রথম পর্ব শেষ হয়।