প্রতিনিধি পাবনা
![]() |
ঈশ্বরদীর গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষ আসলাম হোসেনের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করছেন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
পাবনার ঈশ্বরদীতে অধ্যক্ষ আসলাম হোসেনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রতিষ্ঠান চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি উপজেলা শহরের রেলগেট ট্রাফিক মোড় পর্যন্ত গিয়ে মানববন্ধনে রূপ নেয়। এ সময় তারা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, যৌন হয়রানি, আর্থিক অনিয়ম, অতিরিক্ত টাকা আদায়, স্বেচ্ছাচারিতা এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোসহ বিভিন্ন অভিযোগে গত বছর অধ্যক্ষ আসলাম হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি তিনি পুনরায় দায়িত্বে ফেরার চেষ্টা করছেন এবং তাঁর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে—এমন খবরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এরই প্রতিবাদে তারা আবারও আন্দোলনে নামে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী শামন্তা রহমান ঐশ্বর্য। তিনি বলেন, ‘অধ্যক্ষ আসলাম হোসেনের আচরণ অত্যন্ত অনৈতিক ও অশোভন। তাঁর মতো একজন ব্যক্তি কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালনের যোগ্য নন। আমরা চাই, তাঁকে দ্রুত স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হোক।’
আফরোজা জাহান বলেন, ‘তিনি আমাদের সঙ্গে এমনভাবে কথা বলেন, যেন আমরা মানুষই নই। একজন শিক্ষক যদি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করতে পারেন, তাহলে তাঁর কাছে আমাদের ভবিষ্যৎ গড়া সম্ভব নয়।’
মাওয়া বলেন, ‘ক্লাসে পাঠদানের চেয়ে টাকার হিসাবই বেশি শোনাতেন তিনি। আমরা কেন অযথা ফরম ফিলআপ বাবদ অতিরিক্ত টাকা দেব? এসব অনিয়মের কারণেই আমরা তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি।’
সাবাহ ইসলাম বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ক্লাস করতে চাই। কিন্তু অধ্যক্ষকে পুনর্বহালের উদ্যোগের পর থেকে আমরা মানসিকভাবে প্রচণ্ড চাপে আছি।’
জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২৫ আগস্ট শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। এরপরই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির জরুরি সভায় তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করে সিদ্ধান্ত বোর্ডে পাঠানো হয়। তখন কমিটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন ইউএনও সুবীর কুমার দাশ।
বর্তমানে বিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্বে থাকা অস্থায়ী কমিটির সভাপতি ইমরান কায়েস শাওন বলেন, ‘আমি সদ্য দায়িত্ব নিয়েছি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে পরবর্তীতে মন্তব্য করব।’
এসব অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে সাময়িক বরখাস্ত অধ্যক্ষ আসলাম হোসেন বলেন, ‘অভিযোগগুলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হয়- এমন কিছু করিনি। তদন্তে সত্য স্পষ্ট হয়েছে, বাকিটা কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করবে।’