প্রতিনিধি নেত্রকোনা

নেত্রকোনায় হত্যা মামলার আসামিদের বাড়িতে দফায় দফায় ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। পালিয়ে বেড়াচ্ছেন আসামিদের স্বজনরা | ছবি: আইএসপিআর

নেত্রকোনার মদনে একটি হত্যা মামলার আসামিদের বাড়িতে দফায় দফায় হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। পরিস্থিতি শান্ত না হওয়ায় আসামিদের পরিবারগুলো আশ্রয় নিয়েছে স্বজনদের বাড়িতে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১১ মে ফুটবল খেলা নিয়ে উপজেলার বারবুড়ি গ্রামে গিয়াস উদ্দিন ও মানিক মিয়ার লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১২ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে গিয়াস উদ্দিনের পক্ষের লাহুত মিয়া (৪৫) ঘটনার চার দিন পর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।

এ ঘটনায় নিহত লাহুত মিয়ার ভাই আবুল বায়েছ ৩৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১২ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলার পর থেকে আসামিরা গ্রেপ্তারের ভয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।

স্থানীয় সূত্রের ভাষ্য, এই সুযোগে বাদীপক্ষের লোকজন আসামিদের বাড়িতে দফায় দফায় হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। পরে এসব ঘটনায় হত্যা মামলার আসামি মানিক মিয়ার স্ত্রী হাসনা আক্তার গত শনিবার ৭১ জনের নামসহ অজ্ঞাতনামা ১৩১ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় আসামিরা আদালত থেকে জামিন পেয়ে আবারও ভাঙচুর করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে হত্যা মামলার আসামিরা বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।

হত্যা মামলার আসামিপক্ষের হাসনা আক্তার, রিনা আক্তার, মুসলিম উদ্দিন, জমিলা আক্তারসহ কয়েকজন বলেন, সংঘর্ষে লাহুত মিয়া মারা যাওয়ার পর তাঁর পক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষের ঘরবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েই যাচ্ছেন। হাসনা আক্তার বলেন, প্রাণ রক্ষার্থে তাঁরা এখন বাড়ি থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। পুরুষ মানুষ বাড়িতে না থাকায় বসতঘরের আসবাব, ধান, চাল, গরু, ছাগল যা কিছু আছে, সব লুটপাট করে নিয়ে যান। তাঁরা এখন স্বজনদের বাড়িতে থাকছেন।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নিহত লাহুত মিয়ার স্বজনেরা। মাঈনুল ইসলাম নামের এক স্বজন বলেন, ‘মানিক মিয়া ও তাঁদের লোকজন লাহুত মিয়াকে হত্যা করেছেন। এ সময় আমাদের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। এ নিয়ে আমরা মামলা করেছি। মামলা থেকে বাঁচতে এখন তাঁরা নিজেরাই নিজেদের বাড়িঘর ভাঙচুর করে আমাদের দোষ দিচ্ছেন। আমরা কারও ঘরবাড়িতে ভাঙচুর বা লুটপাট করিনি।’

মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাঈম মুহাম্মদ নাহিদ হাসান বলেন, লাহুত হত্যা মামলার আসামিদের বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিরা এখন জামিনে আছেন। এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ চেষ্টা করছে।