নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে দলটির একটি প্রতিনিধিদল আজ রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ছত্রে-ছত্রে, অক্ষরে-অক্ষরে প্রয়োগের মধ্য দিয়ে ভবিষ্যতে একটি নির্বাচনে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে এই মন্তব্য করেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, পুরোনো যে সিস্টেম (ব্যবস্থা) রয়েছে, তা কাঠের পেরেক মারার মতো। যখন ইচ্ছা তখন একটি দ্রুত নির্বাচনের আয়োজন করে দেওয়া, একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে নষ্ট করা—এই সুযোগ ছাত্র-জনতা এবার আর দেবে না।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, তাঁরা নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) বলেছেন, নতুন বাংলাদেশে ইসিকে একটি সুন্দর প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।

বিগত নির্বাচনগুলোতে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক। তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ বিষয়ে তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, আওয়ামী লীগ দেশ ও দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ফ্যাসিস্ট কাঠামোতে নিয়ে গিয়েছিল। মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিল। এর দায় নির্বাচন কমিশনেরও। বিগত নির্বাচনগুলোতে যাঁরা প্রার্থী হয়ে অংশ নিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের যাঁরা অনিয়মে যুক্ত হয়েছেন, তাঁদের বিষয়ে তদন্ত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছে।

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, নির্বাচন কমিশনকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নির্বাচনের বিষয়ে সার্টিফিকেশন দিতে হবে যে নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য হয়েছে কি না। যাতে করে পরবর্তী সময় একটি প্রাতিষ্ঠানিক আকারে, ব্যাপ্তি আকারে নির্বাচন কমিশনকে আইনের আওতায় আনা যায়। তাঁরা দেখেছেন, নির্বাচন কমিশন গত ১৫ বছরে কোনো সার্টিফিকেশন দেয়নি। বরং বিভিন্ন দলীয় অফিস থেকে সার্টিফিকেশনগুলো এসেছে।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আরও বলেন, মনোনয়নপত্র জমা দিতে সশরীর আসার বিধান করা, প্রার্থীদের হলফনামা তদন্ত করে সত্যতা নিরূপণ করা, নির্বাচনী সহিংসতা রোধে আচরণবিধি ও ব্যয়ের বিধিতে পরিবর্তন আনা, ঋণখেলাপিদের নির্বাচনে অংশ নেওয়া বন্ধ করা, হলফনামায় ভুল তথ্য থাকলে প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল ও নির্বাচিত হলেও যেন তাঁরা সংসদে থাকতে না পারেন, সেই ব্যবস্থা করা, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য সময় বাড়ানো, রাজনৈতিক দলগুলো যেন অভ্যন্তরীণ গণতান্ত্রিক চর্চা করে, তা মনিটরিং করার কথা তাঁরা তুলে ধরেছেন। এ ছাড়া প্রতিটি দলকে নতুন করে নবায়ন করা, সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাস্তবায়নের তাগিদ তাঁরা দিয়েছেন।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সিইসির সঙ্গে বৈঠক করতে তাঁর কার্যালয়ে যায়। এনসিপির প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায়, খালেদ সাইফুল্লাহ, মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন ও তাজনুভা জাবীন।