নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
![]() |
শনিবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে আয়োজিত দলের বর্ধিত সভায় জিএম কাদের | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো সংস্কারের প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেন, সংস্কার হলো নির্বাচন পেছানোর বাহানা। দেশের ৫০ ভাগ মানুষকে বাদ দিয়ে সরকার যে সংস্কার করতে চাইছে, তা কোনো দিনই কার্যকর হবে না।
শনিবার রাজধানীর বনানীতে দলের বর্ধিত সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জি এম কাদের সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
জি এম কাদের সাংবাদিকদের আরও বলেন, ‘নির্বাচিত সরকারকেই বৈধ সরকার বলা হয়। এই সরকার নির্বাচিত নয়। কিন্তু হাইকোর্ট এই সরকারকে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন, আমরা মেনে নিয়েছি। এ সরকার মাঝামাঝি হয়ে গেছে। এই সরকার যে সংস্কারই করুক, তা নির্বাচিত সংসদে পাস করতে হবে। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো সংস্কারের প্রয়োজন নেই।’
আওয়ামী লীগ-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অপরাধের বিচারের আগে নির্বাচন নয়—বিভিন্ন দলের এমন বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে জি এম কাদের বলেন, ‘বিচারব্যবস্থায় কেউ বাধা দিচ্ছে না। বিচারের সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে বিভিন্ন অজুহাতে নির্বাচন পেছানো হচ্ছে। বর্তমান সরকার বুঝতে পারছে না, নির্বাচন দীর্ঘায়িত করে দেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করছে। এই সরকার দেশ চালাতে পারবে না। নির্বাচন পেছানোর কারণে তারা কত বড় গর্তে পড়বে, তা তারা বুঝতে পারছে না।’
একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হচ্ছে সব সমস্যা সমাধানের প্রথম ধাপ—মন্তব্য করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, যত দ্রুত সম্ভব সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। তার আগে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঠামো ঠিক করতে হবে। পুলিশ ও প্রশাসন যেন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে, সে ব্যবস্থা করতে হবে। সরকার যেন নিরপেক্ষভাবে কাজ করে, সে নিশ্চয়তা থাকতে হবে।
বিগত সময়ে জাতীয় পার্টির ভূমিকার কথা উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচনে আমি এবং জাতীয় পার্টির ৭০ ভাগ নেতা-কর্মী নির্বাচনে অংশ নিইনি। আমাকে নির্বাচিত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, আমি রাজি হইনি। কিন্তু ২০১৪ সালের স্থানীয় নির্বাচনে বিএনপিসহ প্রায় সব দলই অংশ নিয়েছিল। ২০১৮ সালের নির্বাচনে দেশের সব দলই অংশ নিয়েছিল। আমরাও সবার সঙ্গে নির্বাচনে গিয়েছিলাম। ২০২৪ সালের নির্বাচনে বিশেষ কারণে আমাদের নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল।’
নির্বাচনে অংশগ্রহণ ‘বেআইনি কাজ নয়’ বলে মন্তব্য করে জি এম কাদের বলেন, ‘আমার দল যদি নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেয়, আমি নির্বাচন করতে পারি। আমি তো কোনো আইন ভঙ্গ করিনি। নির্বাচনের আগে ও পরে তৎকালীন সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছি। আমার চেয়ে কঠোর সমালোচনা কেউ করেনি। নির্বাচন সঠিক হয়নি—এর বিশদ বর্ণনা দিয়ে বক্তৃতা করেছি, কলাম লিখেছি। সব রেকর্ড আছে।’
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়ার পরিচালনায় বর্ধিত সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার প্রমুখ।