[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

বগুড়ায় সবজির সরবরাহ প্রচুর, পাইকারির সঙ্গে খুচরা বাজারের দামে বিস্তর ফারাক

প্রকাশঃ
অ+ অ-

বগুড়ার বাজারে ব্যাপক সবজির আমদানি হচ্ছে। কিন্তু দাম চড়া। বগুড়া শহরের রাজা বাজারে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি বগুড়া: সবজির উৎপাদন এলাকা হিসেবে পরিচিত বগুড়ার পাইকারি ও খুচরা বাজারে বেড়েছে সব রকমের সবজির দাম। বাজারে প্রচুর পরিমাণে সবজির সরবরাহ থাকলেও দামে লাগাম টানা যাচ্ছে না। এতে হিমশিম অবস্থার মধ্যে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে পাইকারি বাজারে তুলনায় খুচরা বাজারে অনেক বেশি দামে পণ্য বিক্রি হচ্ছে বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।

বগুড়া অঞ্চলে রেকর্ড সবজি ও আলু উৎপাদিত হয়। গত শীত মৌসুমে জেলায় ২৩ হাজার ৯৩৫ হেক্টর জমিতে ৫ লাখ মেট্রিক টনের বেশি শীতকালীন সবজি উৎপাদিত হয়। খরিপ মৌসুমেও রেকর্ড সবজি চাষ হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

উত্তরাঞ্চলে সবজির অন্যতম বড় পাইকারি মোকাম বগুড়ার মহাস্থান হাট। সেখানে শনিবার সবজির প্রচুর সরবরাহ দেখা যায়। ক্রেতা-ব্যাপারীর হাঁকডাকে সরগরম হাট। কিন্তু সব ধরনের সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী।

শিবগঞ্জ উপজেলার গাড়িদহ গ্রামের কৃষক সাহেব আলী হাটে এসেছিলেন ১০০ কেজি কচুমুখি বিক্রি করতে। তিনি বলেন, ‘আগেরবার খ্যাত থেকে এক মণ কচু তুলে অ্যানে বেচ্চি ৬০০ টেকা। এইবার দাম চড়া। এক মণ কচু ব্যাচনো ২ হাজার ২০০ টেকা। শহরত লিয়ে ব্যাপারীরা বেচপি ৩ হাজার ২০০ টেকা মণ।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেল, মহাস্থান হাটে  এক কেজি বেগুন বিক্রি করে কৃষক পেয়েছেন ২৫ টাকা। এক হাত বদলের পর ১২ কিলোমিটার দূরে বগুড়া শহরের ফতেহ আলী বাজারে সেই বেগুন খুচরা পর্যায়ে ক্রেতাদের কিনতে হয়েছে ৮০ টাকায়। মহাস্থান হাটে এক কেজি করলা বিক্রি করে কৃষক দাম পেয়েছেন ৩০ টাকা। সেই করলা এক হাত বদলের পর ফতেহ আলী বাজারে বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকায়।

মহাস্থান হাটে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১৪০ টাকা, কচুমুখি ৫০, মুলা ৩২, শসা ৩০, পেঁপে ১০, কাঁকরোল ৩০, পটোল ২৫, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ২২, জালি কুমড়া প্রতিটি ২০, ছাচি কুমড়া ২৫, মুলা প্রতি কেজি ৩২, বরবটি প্রতি কেজি ৩৩, দেশি লাল আলু প্রতি কেজি ৪৫ এবং বিদেশি জাতের সাদা আলু ৩৮ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ছয়ঘড়িয়া কৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম ৮০ কেজি করলা নিয়ে মহাস্থান হাটে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘গতবার করলা বেচ্চি ২০ টেকা কেজি। সেই করলা বেচে এই দাম পাচ্চি ৩২ টেকা।’

শহরের ফতেহ আলী বাজারে এক কেজি কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা, কচুমুখি ৮০, মুলা ৬০, শসা ৬০, পেঁপে ৩০, কাঁকরোল ৭০, পটোল ৫০, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০, জালি কুমড়া প্রতিটি ৪০, ছাচি কুমড়া ৫০, বরবটি ১০০, দেশি লাল আলু প্রতি কেজি ৫৫ এবং বিদেশি জাতের সাদা আলু ৪৫ টাকা দরে কিনেছেন ক্রেতারা।

পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে জানা গেছে, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে আলুর দাম যথাক্রমে ২৭ ও ৩৫ টাকা বেঁধে দেওয়া হলেও বগুড়ায় পাইকারি পর্যায়ে আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে। খুচরা বাজারে এই আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে।

মহাস্থান হাটের আড়তদার ও পাইকারি ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এক কেজি সবজি মহাস্থান হাট থেকে বগুড়া পর্যন্ত পরিবহন, আড়তদারি কমিশন, হাটের খাজনাসহ খরচ গড়ে সর্বোচ্চ দুই টাকা। অথচ মহাস্থান হাটে ২৭ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বেগুন বগুড়া শহরে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা। তিনি বলেন, মহাস্থান হাট পাইকারি মোকামে সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। বৃষ্টির কারণে সবজির দাম আরও বাড়তে পারে।

জানতে চাইলে বগুড়ার ফতেহ আলী বাজারের খুচরা সবজি ব্যবসায়ী মতিউর রহমান বলেন, পাইকারি বাজার থেকে খুচরা দোকান পর্যন্ত এক কেজি সবজির পরিবহন, হাটের টোল, আড়তের কমিশন সব মিলিয়ে গড়ে ৩ থেকে ৪ টাকা। কিছু সবজি পচে নষ্ট হয়। সব মিলিয়ে পাইকারি বাজারের তুলনায় গড়ে ১০ টাকা বেশি দরে খুচরা বাজারে সবজি বিক্রি হয়।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মতলুবর রহমান বলেন, গত শীত মৌসুমে ৫৫ লাখ ৭৫০ হেক্টর জমিতে ১২ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন আলু উৎপাদিত হয়েছে। খরিপ মৌসুমেও রেকর্ড জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। কারসাজির কারণেই সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন